মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাথা কেটে কেউ তাঁর হাতে দিলে, ‘পুরস্কার’ হিসাবে তাঁকে ১১ লাখ টাকা দেবেন বিজেপি-র এক নেতা। বিজেপি-র যুব মোর্চার ওই নেতার নাম যোগেশ ভার্সনে। যোগেশের ওই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর গোটা দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে মঙ্গলবার ওই যুব নেতা বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাথা কেটে আনা ব্যক্তিকে আমি ১১ লাখ টাকা পুরস্কার দেব।’’ কিন্তু, মমতার বিরুদ্ধে হঠাত্ করে এই ফতোয়া জারি করতে গেলেন কেন যোগেশ? ওই নেতা জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে মমতা তাঁর রাজ্যে সরস্বতী পুজো করতে দেন না, রাম নবমী এবং হনুমান জয়ন্তীতে সমাবেশ করতে দেন না। মুসলমান সম্প্রদায়েরই তোষণ করে যাচ্ছেন তিনি। কাজেই তিনি চরম শাস্তি পাওয়ার যোগ্য।

মঙ্গলবার রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হনুমান জয়ন্তী পালন করে বিজেপি। কিন্তু, বীরভূমের সিউড়িতে অনুমতি না নিয়ে মিছিল করায় পুলিশ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উপর লাঠি চার্জ করে। যোগেশ সেই ঘটনার উল্লেখ করে, বলেন, ‘‘বীরভূমে মমতার সরকার হনুমান জয়ন্তীর মিছিলে যে ভাবে লোকজনকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে, তা বলার নয়। আমি বুঝতে পারি না, মমতা ইফতার পার্টির আয়োজন করেন। সব সময় মুসলমানের পাশে থাকেন। কিন্তু, হিন্দুরা কি মানুষ নয়?’’

বীরভূমের ঘটনার ভিডিও নাকি দেখেছেন যোগেশ। যা দেখে তাঁর চোখে জল এসে গিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে হনুমান-ভক্তদের উপর লাঠি চালানো হচ্ছিল, কারও ভিতর যদি মানবতার এতটুকুও অবশিষ্ট থাকে, তবে এ ভাবে কাউকে মারা যায় না।’’ যোগেশ সিউড়ির ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন। মঙ্গলবার কী হয়েছিল সেখানে? হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে ওই দিন সকালে সিউড়ির বড়বাগান থেকে মিছিল বের করেন শতাধিক মানুষ। ওই মিছিলের জন্য পুলিশের অনুমতি ছিল না। বরং মিছিল যাতে না হয় সে জন্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকে অনুরোধ পর্যন্ত করেছিল প্রশাসন। তা সত্ত্বেও মিছিল বেরোয় এবং একটা সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার উপক্রম হয়। তাই বাধা দেয় পুলিশ। মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চার্জও করা হয়। সেই ঘটনার ভিডিও দেখেই যোগেশ ওই মন্তব্য করেন। গোটা ঘটনার জন্য তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ী করেছেন।

যোগেশের মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর তাঁর নিন্দায় এ দিন সরব হয়েছেন সকলেই। সংসদও উত্তাল হয়। মায়াবতী, জয়া বচ্চন-সহ অনেকেই সরব হন। বিজেপিও ঘটনার নিন্দা করেছে। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ তো রীতিমতো খুনের হুমকি! এই ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই।’’