কুলভূষণ যাদবের ফাঁসি রুখতে আজ গর্জে উঠল সংসদ। একযোগে সমস্ত দল পাকিস্তানের এহেন সিদ্ধান্তের কড়া নিন্দা করে যে কোনও মূল্যে এই মৃত্যুদণ্ড রোখার দাবি জানিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছে কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধী দলগুলি। নরেন্দ্র মোদী আজ লোকসভা বা রাজ্যসভায় উপস্থিত ছিলেন না। তবে সংসদের দু’কক্ষেই ঝাঁঝালো বিবৃতি দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। জানিয়েছেন, প্রয়োজনে প্রথার বাইরে গিয়েও কুলভূষণের জীবনরক্ষার জন্য লড়বে ভারত। তাঁর মতে, কুলভূষণ কেবল তাঁর বাবা-মায়ের সন্তান নন, গোটা ‘হিন্দুস্থানের বেটা’। একই রকম ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহও।
কংগ্রেস অবশ্য আজ লোকসভার অধিবেশন শুরু হতেই কেন্দ্র তথা প্রধানমন্ত্রীকে রাজনৈতিক ভাবে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছিল। এই বিষয়ে মুলতুবি প্রস্তাব এনে দলের লোকসভার নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে অভিযোগ তোলেন, মোদী বিনা আমন্ত্রণে নওয়াজ শরিফের কাছে হাজির হতে পারেন, কিন্তু এক বছর ধরে আটক কুলভূষণকে ছাড়াতে কেন তাঁর সরকার কোনও ব্যবস্থা নিতে পারল না! এর পরেই সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অনন্তকুমার বলেন, ‘‘আপনারা এই ওঁছা রাজনীতি করবেন না। এটা জাতীয় স্বার্থের প্রশ্ন।’’ এর পরে অবশ্য সংসদের দু’কক্ষেই দলমত নির্বিশেষে সাংসদেরা এককাট্টা হয়ে প্রতিবাদে মুখর হন। সুষমা বিবৃতিতে বলেন, ‘‘কুলভূষণ যাদব অন্যায় করেছেন— এমন কোনও প্রমাণ নেই। তিনি পাকিস্তানের চক্রান্তের শিকার। পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে চলেছে, তা কারও অজানা নয়। এই দিকটি থেকে বিশ্বের নজর সরাতে ও ভারতকে কালিমালিপ্ত করতেই ইসলামাবাদ এটা করেছে। এটা হত্যার ছক ছাড়া কিছু নয়।’’ পাক বিদেশমন্ত্রী খ্বাজা আসিফ আজই জানিয়েছেন, ৬০ দিনের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আবেদন করার সুযোগ পাবেন কূলভূষণ। রাজ্যসভায় কংগ্রেসের নেতা গুলাম নবি আজাদ জানতে চান, ‘‘ভারত কি বড় কোনও আইনজীবীকে দাঁড় করানোর কথা ভাবছে?’’
বিদেশমন্ত্রী তৎক্ষণাৎ জবাব দেন, ‘‘এ তো খুবই সামান্য বিষয়। দরকারে পাক প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও কথা বলা হবে। কুলভূষণকে মুক্ত করতে ভারত যা যা করা যায়, সব করবে। দরকারে প্রচলিত প্রথার বাইরে যেতেও দেশ তৈরি।’’ প্রচলিত প্রথার বাইরে যাওয়া বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে বিজেপির সুব্রহ্ম্যণ্যম স্বামী এ দিন সংসদের বাইরে মন্তব্য করেন, ‘‘বালুচিস্তানকে এখনই স্বাধীন দেশ ঘোষণা করা উচিত নয়াদিল্লির।’’ কংগ্রেসের পি চিদম্বরমের বক্তব্য, ‘‘কোনও বিদেশির বিচার করার এক্তিয়ার নেই সামরিক আদালতের।’’