ইরাকের যুদ্ধকবলিত শহর মসুল থেকে পালানোর চেষ্টাকালে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) শহরটির বহু বেসামরিক বাসিন্দাকে হত্যা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।হত্যার পর নিহতদের অনেকের লাশ বৈদুতিক খুঁটিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

কুর্দিস্তান অঞ্চলের নিরাপত্তা কাউন্সিল জানিয়েছে, শহর ছেড়ে পালানো চেষ্টাকালে সোমবার ও মঙ্গলবার জঙ্গিদের হাতে ১৪০ জনের মতো বেসামরিক নিহত হয়েছেন।শহরটি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে আইএসের সঙ্গে লড়াই করছে ইরাকি বাহিনী, কিন্তু তাদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়তে হচ্ছে।প্রায় তিন বছর আগে মসুলের পুরনো অংশের আল নুরি মসজিদ থেকেই নিজেদের খিলাফতের ঘোষণা দিয়েছিল আইএস। ইরাকি বাহিনীর অভিযানের মুখে এখন আইএস জঙ্গিরা ক্রমেই পুরনো শহরের দিকে পিছিয়ে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত নুরি মসজিদ ও এর আশপাশের গলি, ঘুপচিগুলোতে জঙ্গিদের সঙ্গে সৈন্যদের মরণপণ যুদ্ধ হবে।টেলিফোনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে মসুলের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, তেনেক এলাকায় অন্য তিনজন যুবকের সঙ্গে তার এক আত্মীয়কে মেরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে, তারা শহর ছেড়ে পালানো চেষ্টা করেছিল।দুই দিন ধরে তাদের লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা তাদের লাশ নামাতে পারিনি। অঙ্গহানি ঘটানোয় লাশগুলো দেখতে ভয়ানক হয়ে আছে, পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন তিনি। নুরি মসজিদ যেখানে অবস্থিত পুরনো শহরের সেই ফারুক এলাকার এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, পালানোর সময় ধরা পড়া ৪০ জনেরও বেশি বেসামরিক বাসিন্দাকে হত্যা করেছে জঙ্গিরা।

অন্য আরেকজন জানিয়েছেন, একই কারণে পুরনো শহরের শাহবান এলাকায় এক বৃদ্ধাসহ এক পরিবারের ছয় জনকে হত্যা করা হয়েছে।ইয়ারমৌক এলাকার আরেক নারী জানিয়েছেন, স্বামী ও সন্তানসহ প্রায় ৩০ জনের একটি দলের সঙ্গে পালানোর সময় জঙ্গিদের হাতে ধরা পরার পর কোনোরকমে জান বাঁচাতে পেরেছেন তারা।নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পালিয়ে আসা এই নারী বলেন, তারা আমাদের ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে সেগুলোতে অর্থ ও সোনা আছে কিনা দেখতে শুরু করে, এই ফাঁকে ঘন অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে আশপাশের বাড়িগুলোর মধ্যে দিয়ে পালিয়ে আসি আমরা।যারা পালাতে পারেনি তাদের শোচনীয় ভাগ্য বরণ করতে হয়েছে বলে আশঙ্কা করছি।ইরাকে আইএসের শহরকেন্দ্রিক শেষ শক্তিকেন্দ্র মসুল পুনরুদ্ধারে বড় ধরনের অভিযান শুরু করার পর থেকে ইরাকি বাহিনী শহরটির অধিকাংশ ও এর আশপাশের অনেক এলাকা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।