কলকাতা থেকে খুলনা-ঢাকার মধ্যে নতুন যাত্রীবাহী বাস-সেবা চালু হলো। শনিবার ভারতীয় সময় বেলা সোয়া একটায় দিল্লি থেকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে এই সেবা উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।কলকাতার রাজ্য সচিবালয় নবান্নর সামনে প্রস্তুত রাখা দুটি বাস দিল্লি থেকে উদ্বোধনের পর কলকাতার কর্মকর্তারা সবুজ পতাকা নেড়ে এ সেবার সূচনা করেন। এ সময় কলকাতায় উপস্থিত ছিলেন পৌরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি ও রাজ্যের পরিবহনসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। বাস দুটি কলকাতা-বেনাপোল-যশোর-খুলনা হয়ে ঢাকা পৌঁছাবে।১৯৯৮ সালে প্রথম কলকাতা-ঢাকার মধ্যে যাত্রীবাহী বাস চলাচল শুরু হয়েছিল। রোববার ছাড়া প্রতিদিনই এ বাস চলছে ঢাকা ও কলকাতার মধ্যে। ২০১৫ সালে কলকাতা-ঢাকা-আগরতলার মধ্যে চালু করা হয় যাত্রীবাহী বাস চলাচল। এবারে শুরু হলো কলকাতা-খুলনা-ঢাকার মধ্যে ফের যাত্রীবাহী বাস চলাচল

এদিকে,দিনাজপুরের বিরল সীমান্ত দিয়ে ডুয়েল গেজ রেলপথে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে।ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যৌথভাবে শনিবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে দিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাধিকাপুর স্টেশনে বাণিজ্যিক ওই রুট উদ্বোধন করেন।এর ফলে ভারত ছাড়াও সার্কভুক্ত নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমারের সঙ্গে রেলপথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহনের সুযোগ তৈরি হলো।

রুট উদ্বোধনের পর বিকেলে রাধিকাপুর স্টেশন থেকে দিনাজপুরের বিরল সীমান্ত দিয়ে ৪২টি তেলের ওয়াগনে ভারতের হাই স্পিড ডিজেল (জ্বালানি) নিয়ে একটি ট্রেন বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পশ্চিমবঙ্গের নিমনগর তেল রিফাইনারি ডিপো থেকে যাত্রা করা ট্রেনটি দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের তেল ডিপোতে যায়। এ পণ্যবাহী ট্রেনে মোট ২ হাজার ২শ’ মেট্রিক টন জ্বালানি রয়েছে।দিনাজপুর স্টেশন সুপার মো. গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে জানান, ট্রেনটি রাধিকাপুর থেকে এসে বিরল রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রা বিরতি করে। সেখানে মালামাল পরীক্ষা করেন ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তারা।এর আগে সকাল ৮টার দিকে জ্বালানি বোঝাই ওয়াগনগুলোকে নিয়ে আসতে বাংলাদেশ থেকে একটি ইঞ্জিন ভারতে প্রবেশ করে।পরে সব ধরনের কার্যক্রম শেষে বিকেলে ট্রেনটি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এখন থেকে এ রেলপথে জ্বালানি ও পাথরসহ সব ধরনের পণ্য কম খরচে পরিবহন করা যাবে।তিনি আরো জানান, ব্রিটিশ আমলে অবিভক্ত ভারত ও স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত মিটার গেজ রেলপথে নেপাল, ভারত ও মিয়ানমায়ের মধ্যে সীমিত সংখ্যক পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করতো। ২০০৬ সালে ভারত রাধিকাপুর পযর্ন্ত ব্রড গেজ রেলপথ স্থাপন করায় ওই রুটে রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

গত গত ৮ মার্চ ভারত থেকে ৪২টি ওয়াগনে ২ হাজার ৪৭২ মেট্রিক টন পাথর নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে একটি ট্রেন বাংলাদেশে প্রবেশ করে।পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের রাধিকাপুরের সঙ্গে বাংলাদেশের দিনাজপুরের পার্বতীপুর রেলওয়ে জংশন (স্টেশন) পর্যন্ত ইতিমধ্যে ডুয়েল গেজ রেলপথ সম্প্রসারণ কাজ শেষ করা হয়। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আমদানি ও রফতানির কাজ ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশে অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণসহ সরকার ২০০২ সালে বিরলসহ ১৩টি শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে রূপান্তর করে।