আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নিয়েছেন। এ ঘোষণা আনুষ্ঠানিকভাবেই দিয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে বিসিবির পক্ষ থেকে এবার অন্য রকম তথ্য পাওয়া গেল। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের দাবি, মাশরাফি কেবল অধিনায়কত্ব ছেড়েছেন, টি-টোয়েন্টি ছাড়েননি।শুধু তা-ই নয়, নাজমুলের কথা, যদি প্রয়োজন পড়ে মাশরাফিকে টি-টোয়েন্টি দলে বিসিবি অবশ্যই রাখবে। নাজমুল যেটিকে বলছেন, ‘আমাদের দরকার হলে আমরা কি তাকে ছেড়ে দেব?

শুক্রবার শ্রীলঙ্কা থেকে দেশে ফেরার পর নাজমুল সাংবাদিকদের যা বলেছেন, তা যথেষ্ট বিভ্রান্তির জন্ম দিতে পারে। মাশরাফির টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর ঘোষণায় দেশব্যাপী এত শোরগোলে বিস্ময় প্রকাশ করার পর নাজমুল বলেছেন, ‘কিন্তু একটা কথা বারবার বলছি, মাশরাফি কিন্তু টি-টোয়েন্টি ছাড়েনি। আমরা এখনো বলিনি মাশরাফি স্কোয়াডে (টি-টোয়েন্টির দলে) নেই। ও অধিনায়কত্ব ছেড়েছে!মাশরাফি নিজে টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায়ের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন কলম্বোর প্রথম টি-টোয়েন্টিতে। টসের সময়। এর আগে নিজের ফেসবুক পেজে বড় বিবৃতিও দিয়েছেন। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টির ব্যাপারে অবশ্য এখনো কিছু বলেননি। এখন নাজমুলের কথা শুনে মনে হচ্ছে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তাঁকে দলে এখনো বিবেচনা করছে বাংলাদেশ!

নাজমুল তাঁর বক্তব্যের আরও একটু ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তিন সংস্করণে আমাদের তিন অধিনায়ক হবে-আমি প্রথম থেকেই বলছি। ও নিজেকে ফিট মনে করলে অবশ্যই থাকবে (টি-টোয়েন্টি দলে)। আমাদের দরকার হলে আমরা কি তাকে ছেড়ে দেব? অধিনায়কত্ব শুধু ভাগ হয়েছে। মুশফিক তিন সংস্করণেই অধিনায়ক ছিল। ওর দুটির অধিনায়কত্ব চলে গেছে বলে কি মুশফিক বিদায় নিয়েছে? কোটি কোটি দর্শকের সামনে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে গুছিয়ে লিখেছেন অনেক কিছু। সংবাদ সম্মেলনে অবসর নিয়ে কত কথা, প্রতিক্রিয়া। সতীর্থদের আবেগের ঢেউ। স্মরণীয় জয়ে বিদায়। তবে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসানের দাবি, মাশরাফি টি-টোয়েন্টি ছাড়েননি!মাশরাফির অবসর নিয়ে কলম্বোতেও প্রায় একই দাবি করেছেন নাজমুল। শুক্রবার দেশে ফিরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে আবারও শোনালেন একই কথা। আমি একটা কথা বারবারই বলছি, মাশরাফি কিন্তু টি-টোয়েন্টি এখনও ছাড়েনি। আমরা এখন পর্যন্ত মাশরাফিকে বলিনি যে, মাশরাফি টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে নেই। ও অধিনায়কত্ব ছেড়েছে। আমাদের তিনটা ফরম্যাটে তিনজন অধিনায়ক। সেটা আমি অনেক আগেই বলেছি। ও যদি ফিট থাকে খেলবে। যদি বলে খেলতে চায় না, কিন্তু আমাদের দরকার হয়, তাহলে কি ছেড়ে দিব?

মাশরাফির টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায়ে যে তোলপাড়, এটারও কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না ক্রিকেটারদের অভিভাবক সংস্থার প্রধান।বাংলাদেশ ছাড়া টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়কত্বে কে রিটায়ার করল, কে গেল, এটা নিয়ে কোনো দিন কোনো জায়গায় নিউজ দেখেনি। শুধু বাংলাদেশেই এত হুলস্থুল দেখছি। যে কোন দেশে ওয়ানডে নিয়ে কথা হয়, টেস্ট নিয়ে হয়, কিন্তু টি-টোয়েন্টি নিয়ে এমন আলোচনা হয় না।মাশরাফির মনে কষ্ট না থাকার কোনো কারণ নেই। কারণ ও একজন খেলোয়াড়। শুধু খেলোয়াড়ই নয়, ও দলটাকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। তাছাড়া খেলা থেকে অবসর, সেজন্য খারাপ লাগতেই পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু না। আমারও লাগত।বোর্ড প্রধানের দাবি, মাশরাফিকে যখন নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছিল, তখন দলেই তার জায়গা হয় না।
ওকে যখন অধিনায়ক করা হয় টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডেতে, ও স্কোয়াডেই ছিল না। ও তখন ইনজুরিতে। ওকে যখন বানানো হয়েছে, তখন নিশ্চয়ই একটা বিশেষ কথা চিন্তা করে করা হয়েছিল। সেই ভূমিকা সে পুরোপুরিভাবে সার্থকভাবে করেছে, সেজন্য ওর পাশাপাশি আমরাও গর্বিত।