সিলেটে শিববাড়ির আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শেষ করার পাঁচ দিন পর নিহত দুই জঙ্গির লাশ আজ সোমবার বিকেলে উদ্ধার করা হয়েছে।এর আগে গত ২৮ মার্চ অভিযান শেষ করার দিন এক নারী জঙ্গিসহ দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। তখন সেনাবাহিনী সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিল, ভেতরে আরও দুটি লাশ পড়ে আছে। সোমবার বিকেলে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-৯) বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়কারী দল আতিয়া মহলে ঢুকে লাশ দুটি উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।বিকেল সাড়ে পাঁচটায় র‌্যাব-৯ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু হায়দার মো. আজাদ আহমদ পাঠানপাড়া এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, লাশ দুটি ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পাওয়া গেছে। তবে লাশের গায়ে কোনো ধরনের সুইসাড ভেস্ট ছিল না। আতিয়া মহল পুরোপুরি বিস্ফোরকমুক্ত করতে আরও কয়েক দিন লেগে যেতে পারে বলে তিনি জানান। কাল মঙ্গলবার সকাল থেকে র‌্যাবের বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়কারী দল আবার অভিযান চালাবে বলে তিনি জানান।

সিলেট মহানগর পুলিশের মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল জানান, লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে গত ২৩ মার্চ দিবাগত রাত আড়াইটায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় আতিয়া মহল নামের পাঁচতলা এই বাড়ি ঘিরে ফেলে পুলিশ। পরদিন ২৪ মার্চ ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াট গিয়ে অভিযানে অংশ নেয়। ২৫ মার্চ সকাল থেকে সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশন ও বিশেষায়িত কমান্ডো দল অপারেশন টোয়াইলাইট’ নামে অভিযান শুরু করে। অভিযানে দুই দফা বিস্ফোরণে র‌্যাবের গোয়েন্দাপ্রধান, দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ সাতজন নিহত হন। আহত হন ৪৪ জন। ১১১ ঘণ্টা পর গত মঙ্গলবার সেনাবাহিনী সফলভাবে অভিযান শেষ করে। এর আগে বাড়িটির ২৮টি ফ্ল্যাটে আটকা পড়া ৭৮ জন নারী, পুরুষ ও শিশুকে নিরাপদে বের করে আনেন সেনা কমান্ডোরা।

এদিকে, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহল ঘিরে ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ চলাকালে দুটি বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনের নাম প্রকাশ করেছে পুলিশ।সোমবার মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, সন্দেহভাজন একজনের নাম আশরাফুল আলম নাজিম। তাঁর বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে। এ বিষয়ে আরও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

আতিয়া মহল নামের পাঁচতলা বাড়িটি ২৩ মার্চ দিবাগত রাত আড়াইটায় ঘিরে ফেলে পুলিশ। পরের দিন ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াট গিয়ে অভিযানে অংশ নেয়। ২৫ মার্চ সকাল থেকে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দল ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ নামে অভিযান শুরু করে। ওই দিন সন্ধ্যায় অভিযানের মধ্যে দুই দফা বিস্ফোরণে র‌্যাবের গোয়েন্দা প্রধান ও দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ সাতজন নিহত এবং ৪৪ জন আহত হন।

২৮ মার্চ রাতে সিলেটের জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্টে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে ১১১ ঘণ্টার ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’-এর আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন সেনা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান। পরে ভবনটি পুলিশের তত্ত্বাবধানে দেওয়া হয়।