সারা বিশ্বে সংসদগুলোতে নারীদের গড় অংশ গ্রহণ ২৩ শতাংশ। এটাকে ৫০ এ উন্নীত করার জন্য ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) কাজ করছে।শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি ) ১৩৬তম আইপিইউ সম্মেলনে ফোরাম অব ওম্যান পার্লামেন্টারিয়ানস শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন ও জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ কথা জানান।এ সম্মেলনে ডা. দীপু মনি আগামী ‘ফোরাম অব ওম্যান পার্লামেন্টের’ চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হয়েছেন।স্পিকার বলেন, প্লানেট ৫০-৫০ লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ সরকার কাজ করছে। সংসদে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

পশ্চাৎপদ নারীদের এগিয়ে নিয়ে আসতে নারী দারিদ্র দূরীকরণ পদক্ষেপ, নারীদের তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জেন্ডার সমতা নিরসনেও বাংলাদেশ সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্পিকার। তবে এখনও জেন্ডার বৈষম্য নিরসনে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে।ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ সরকার প্লানেট ৫০-৫০ অর্জনে কাজ করছে। ইতোমধ্যে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। যেমন তৃণমূলের নারীদের বিভিন্ন স্কিমে সহায়তা করা। বিশেষ করে বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা।তবে প্লানেট ৫০-৫০ অর্জনে সরকারের বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো-এখনও নারীদের বেতন বৈষম্য রয়েছে।নারীরা কাজের ক্ষেত্রে বেশি আন্তরিক বলে মনে করেন স্পিকার। যে কোন কাজ স্বচ্ছতার সঙ্গে করার দৃষ্টান্ত নারীদের রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন শিরীন শারমিন।

আইপিইউ প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আইপিইউ সারা বিশ্বব্যাপী নারী বৈষম্য নিরসনে কাজ করছে। আইপিইউ সদস্যভুক্ত দেশগুলোর সংসদ সদস্য ও পার্লামেন্টের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে কিভাবে নারীর বৈষম্য কমিয়ে আনা যায়, তার কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়।তিনি বলেন, নারী বৈষম্য কমিয়ে আনতে আইপিইউ ইতোমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে। এজন্য সদস্য দেশের পার্লামেন্টের সঙ্গে বিভিন্ন সময় মত বিনিময় করা হয়।এই সেশনে ২০৭ জন নারী সংসদ সদস্য অংশ গ্রহণ করেন। প্রত্যেকে তার দেশে নারী অগ্রসরে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন।শনিবার থেকে শুরু হয়েছে পাঁচদিনের ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সম্মেলন। বৃহৎ পরিসরের আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের আয়োজন করতে ঢাকায় এখন এলাহী কারবার। সম্মেলনে অংশ নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শত শত জনপ্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি ও বিদেশি সাংবাদিকদের পদচারণায় এখন সরগরম রাজধানী ঢাকা।সাধারণত এ ধরনের একটি সম্মেলনে প্রচুর কার্বন নিঃসরণের শঙ্কা থাকলেও এবারের সম্মেলনকে কার্বন নিঃসরণমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছেন আয়োজকরা।সাংবাদিকদের এমনটিই জানালেন আইপিইউ সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।

সাবের চৌধুরী বলেন, তারা হিসেব করে দেখবেন সম্মেলন উপলক্ষে মোট কী পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হতে পারে। সে অনুযায়ী নিঃসরণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।অবশ্য কীভাবে এই কার্বন নিঃসরণ প্রতিরোধ করা হবে সে ব্যাপারে কিছু বলেননি তিনি।উল্লেখ্য, শনিবার (০১ এপ্রিল) সম্মেলনের প্রথমদিন সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ফোরাম অব ওম্যান পার্লামেন্টারিয়ানস’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্য রাখেন, আইপিইউ নির্বাহী কমিটির চেয়ারপারসন ও জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য রিড্রেসিং ইনইকুয়েলিটিজ: ডেলিভারিং অন ডিগনিটি অ্যান্ড ওয়েল বিয়িং ফর অল’ (বৈষম্যের প্রতিকার: সবার জন্য মর্যাদা ও কল্যাণ নিশ্চিত)।