বৃষ্টি-বাদলা ও মেঘের গর্জন ছাড়াই দেশের একমাত্র মিঠা পানির প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে কার্প জাতীয় (রুই, কাতাল, মৃগেল ও কালিবাইশ) মা-মাছের ডিম ছাড়ার নমুনা পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার (৩১ মার্চ) দুপুরে দিকে হাটহাজারী-রাউজান উপজেলা বেশ কয়েকটি স্থানে এ নমুনা মিলেছে। তবে কিছু অসাধু মহল ‘নমুনা ডিম’ ছাড়ার গুজব রটানোর খবর পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত শুক্রবার দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৩টা নাগাদ হালদার হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার রামদাশ হাট, আজিমার ঘাট, সিপাহীর ঘাট, মগদই, কাগতিয়ার টেক ও নাফিতের ঘাট এলাকায় কার্প জাতীয় মা-মাছ ডিম ছাড়ার নমুনা পাওয়া যায়। হাটহাজারীর গড়দুয়ারা এলাকার ডিম সংগ্রহকারী মো. কামাল উদ্দিন সওদাগর এর সাথে কথা হলে তিনি মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে নমুনা ডিম ছাড়েনি বলে দাবী করে বলেন, হালদায় নমুনা ডিম ছাড়েনি। ডিম ছাড়ার নমুনা পাওয়া গেছে মাত্র। তবে কিছু অসাধু মহল ‘নমুনা ডিম’ ছাড়ার গুজব ছড়িয়েছে। তিনি আরো জানান, চক্রটি এমন গুজব ছড়িয়ে কৃত্রিম রেনু পোনা উৎপাদন করে বিক্রি করার পাঁয়তারা করে থাকে। এদিকে বিগত ও বর্তমান সময়ে হালদা নদীতে নির্বিচারে মা-মাছ নিধন, হালদার বাঁক কাটা, ডিম ছাড়ার পরিবেশ নষ্ট, রাবার ড্যাম ও এশিয়ান পেপার মিল ও রিফ লেদার লিমিটেড নামক ওই প্রতিষ্টানের ট্যানারির অপরিশোধিত বিষাক্ত বর্জ্য নদীতে পতিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এতে করে বিগত বছরের তুলনায় মা-মাছের ডিম ছাড়ার পরিমাণ কমছে।
উল্লেখ্য যে, দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র মিঠা পানির প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র মিঠা পানির এই হালদা নদী বিশ্বের একমাত্র অন্যতম জোয়ার-ভাঁটার নদী। এখানে প্রতি বছর এই সময়ে কার্প জাতীয় মা-মাছ (রুই, কাতাল, মৃগেল ও কালিবাইশ) সহ বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছের নিষিক্ত ডিম ছাড়ে এবং জেলেরা ডিম সংগ্রহ করে পরে তা কয়েক দফায় বিকিকিনি করে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করে। অপার এই জীব বৈচিত্র ও মৎস্য সম্পদের অন্যতম রূপালী খনি জাতীয় অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রেখে চলেছে বহু বছর ধরে।