সিলেটের আতিয়া মহলে চলমান অপারেশন টোয়াইলাইটের কয়েকটি ভিডিও চিত্র প্রকাশ করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। সোমবার আইএসপিআরের ওয়েবসাইটে এসব ভিডিও প্রকাশ করা হয়।সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার এ বাড়িটি গত বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে ঘিরে রাখা হয়েছে। শুক্রবার ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াত সিলেটে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ঘটনাস্থল ঘেরাও করে। এরপর শনিবার সকাল থেকে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দল অপারেশন টোয়াইলাইট’ নামে অভিযান শুরু করে। এ অভিযানের মধ্যেই শনিবার সন্ধ্যায় দুই দফা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয়জন নিহত এবং আরও ৪৪ জন আহত হন। স্মরণকালের মধ্যে এটা সবচেয়ে দীর্ঘ ও রক্তক্ষয়ী জঙ্গিবিরোধী অভিযান।

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়িতে জঙ্গি আস্তানা ঘিরে অপারেশন টোয়াইলাইট’ এর চতুর্থ দিনে দেয়াল ভেঙে আতিয়া মহলে প্রবেশ করছেন সেনা কমান্ডোরা। সোমবার সকাল থেকে থেমে থেমে গুলি ও বিস্ফোরণ চলার মধ্যেই দুপুরের পর দুইজন সেনা সদস্য সাংবাদিকদের জানান, তারা ইতোমধ্যে দুই পাশের দেয়াল ভেঙে ফেলেছেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের ওয়েবসাইটে অভিযানের পাঁচটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানেও প্যারা কমান্ডোদের হাতুড়ি ও কুড়াল দিয়ে দেয়াল ভাঙতে দেখা যায়।

মানিক রায় নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান,রোববার রাতে বেশ কিছু সময় চুপচাপ থাকালেও পৌনে ২টার পর ওই বাড়ি থেকে বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ পাওয়া যায়। সোমবার সকাল সোয়া ৬টার পর থেকে আবারও থেমে থেমে গুলি এবং বিস্ফোরণ চলতে থাকে বলে জানান তিনি।দুপুরের দিকে খানিকটা সময় বিরতি গেলেও বেলা ৩টার দিকে একটি বিকট বিস্ফোরণের পর ধোঁয়া দেখা উড়তে দেখা যায় পাঁচ তলা আতিয়া মহলের ওপরে। কযেকশ গজ দূরের এক বাড়ির বাসিন্দা জসিম জানান, শব্দের পর আতিয়া মহলের নিচতলা থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিল।পরে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িকে পানি দিয়ে আগুন নেভাতে দেখার কথা জানান তিনি।

গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে আতিয়া মহল ঘিরে ফেলে পুলিশ। শনিবার সকালে শুরু হয় সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’। সেদিন ব্যাপক গোলাগুলির মধ্যে বাড়ির ভেতরে আটকে পড়া ৭৮ জনকে উদ্ধার করেন কমান্ডোরা। এই অভিযানের মধ্যেই সন্ধ্যায় কাছেই এক এলাকায় দুই দফা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ সদস্যসহ ছয়জন নিহত হন। রোববার বিকালে এক ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান জানান, ওই বাড়িতে অন্তত দুই জঙ্গি মারা পড়েছে এবং ভেতরে আরও জঙ্গি রয়েছে বলে তাদের ধারণা।তিনি বলেন, বাড়ির ভেতরে থাকা জঙ্গিদের কাছে স্মল আর্মস, এক্সপ্লোসিভ ও আইইডি আছে। তারা সবাই সুইসাইড ভেস্ট পরে আছে। ভবনের বিভিন্ন স্থানে তারা আইইডি পেতে রাখায় পুরো বাড়ি বিপদজনক অবস্থায় রয়েছে। ফলে অভিযানে সময় লাগছে।