রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে পুলিশের চেকপোস্টে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে একজন নিহত হয়েছে। শক্তিশালী বিস্ফোরণে আত্মঘাতী ওই ব্যক্তির শরীর পেট বরাবর দুই টুকরো হয়ে প্রায় বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ঘটনাস্থলে পড়ে আছে। তবে তাৎক্ষণিক তার পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় কোনও পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার খবর এখনও পাওয়া যায়নি। শুক্রবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে। বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়া এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর পুরো এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে। হামলাকারী নিহত হয়েছে। তবে এখনও তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
পুলিশ জানায়, পুলিশ বক্সে ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে আত্মঘাতী ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। তার বয়স আনুমানিক ২৩-২৫ বছর। পরনে জিন্স প্যান্ট ও ফুলহাতা শার্ট । এছাড়া ঘটনাস্থলে একটি ট্রাভেল ব্যাগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ওই এলাকা ঘিরে রেখেছে। ঘটনাস্থলে সিআইডির ক্রাইম সিন ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের বোম ডিস্পোজাল টিমের সদস্যরা এসে পৌঁছেছেন। পুলিশ সেখানে সাংবাদিকসহ কাউকে যেতে দিচ্ছে না।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (ডিসিডিবি-নর্থ) শেখ নাজমুল আলম জানিয়েছেন, ‘বিমানবন্দরের সমানে গোলচত্বরে থাকা পুলিশ বক্সের সামনে বোমা বিস্ফোরণে একজন নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি। আমরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।’
পুলিশের উত্তরা বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আতিকুর রহমান জানিয়েছেন, বিমানবন্দরে গ্রেনেড বিস্ফোরণ হয়ে একজন নিহত হওয়ার খবরে পেয়েছি। এখনও বিস্তারিত জানি না। আত্মঘাতী ব্যক্তি বোমা নোকি গ্রেনেড বহন করেছিল-এ প্রশ্নে বোম ডিসপোজাল ইউনিটের প্রধান ছানোয়ার হোসেন দৈনিকবার্তা কে বলেন, ‘এখনও বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে মনে হচ্ছে ওই ব্যক্তি বোমা জাতীয় কিছু বহন করছিল।’
পুলিশের দাবি, বিস্ফোরক বহন করে সে কোথাও যাচ্ছিল। যেখানে বিস্ফোরণ ঘটেছে, এখানে হামলা বা নাশকতা করার কথা না। তার অসতর্কতার কারণে এখানে বিস্ফোরণ ঘটেছে।
এদিকে ডিএমপির পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের এসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এটি কোনও হামলা নয়। ওই ব্যক্তি নিজে বোমা বহন করেছিল। সুতরাং এতে আতঙ্কিত হওয়া কিছু নেই। আমি সবাইকে আতঙ্কিত না হওয়া জন্য অনুরোধ করছি। সে কেন বোমা বহন করছিল, কোথায় নিয়ে যাচ্ছিল, অনুসন্ধান শেষে তা জানা যাবে।’
এদিকে ওই আত্মঘাতী ওই যুবকের লাশের অদূরে পড়ে থাকা একটি ট্রাভেল ব্যাগে আরও তাজা বোমা পাওয়া গেছে। রাত সাড়ে ১০টায় বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা লোকজন সরিয়ে দিয়ে ফাঁকা রাস্তায় একটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়। এর আগে ১৭ মার্চ আশকোনার র্যাবের নির্মাণাধীন সদর দফতরে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়। এতে আত্মঘাতী হামলাকারী নিহত হয়। পরদিন ১৮ মার্চ খিলগাঁওয়ে শেখের জায়গা এলাকায় র্যাবের চেকপোস্টে হামলার চেষ্টা করে এক যুবক। র্যাবের গুলিতে ওই যুবক নিহত হয়।