সরকারের আদেশ পেলেই জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও তার দুই সহযোগীর মৃত্যুদ- কার্যকর করতে কারা কর্তৃপক্ষ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন। বুধবার ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের যমুনা ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মৃত্যুদন্ড কার্যকরের নির্বাহী আদেশ এখনো আমাদের হাতে পৌঁছায়নি। ফাঁসি কার্যকরে কারা কর্তৃপক্ষ সবসময়ই প্রস্তুত রয়েছে।

তিন আসামির মধ্যে হরতাকুল জিহাদের শীর্ষ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল রয়েছেন গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে। আরেক আসামি দেলোয়ার ওরফে রিপনকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।তারা মৃত্যুদন্ডের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করলেও আপিল বিভাগ গত ১৯ মার্চ তা খারিজ করে দেয়। মঙ্গলবার সেই রায় প্রকাশের পর বুধবার তা আসামিদের পড়ে শোনায় কারা কর্তৃপক্ষ। কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে জানিয়েছে, মুফতি হান্নান ও বিপুল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার ইংগিত দিয়েছেন। আর রিপন সিলেট কারাগারের কর্মকর্তাদের বলেছেন, তার সিদ্ধান্ত তিনি পরে জানাবেন।কারাবিধি অনুযায়ী সাত দিনের মধ্যে তারা ওই আবেদন করতে পারবেন। প্রাণভিক্ষার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে সরকার তারিখ ঠিক করে দেবে এবং কারা কর্তৃপক্ষ আসামিদের দন্ড কার্যকর করবে।

সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ২০০৪ সালের ২১ মে ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী গ্রেনেড হামলার মুখে পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই পুলিশের এএসআই কামাল উদ্দিন নিহত হন।এছাড়া পুলিশ কনস্টেবল রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া নামের আরেক ব্যক্তি মারা যান হাসপাতালে। আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অন্তত ৪০ জন ওই ঘটনায় আহত হন।ওই ঘটনায় করা মামলার চূড়ান্ত রায়ে আপিল বিভাগ গত বছরের ৭ ডিসেম্বর তিন আসামির সর্বোচ্চ সাজার রায় বহাল রাখে।এ মামলার বাকি দুই আসামি মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে হাই কোর্ট যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছিল। আপিল না করায় তাদের ওই সাজাই বহাল থাকে।

বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে মুফতি হান্নানকে রায়টি পড়ে শোনানো হয় বলে জানান গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের কারা তত্ত্বাবধায়ক মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, রায় পড়ে শোনানোর পর মুফতি হান্নানের কাছে জানতে চাওয়া হয়Ñতিনি প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না। তখন তিনি প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান।দুপুর পৌনে ১২টার দিকে দেলোয়ারকে রায় পড়ে শোনানো হয় বলে জানান সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের কারা তত্ত্বাবধায়ক ছগির মিয়া। তিনি বলেন, মৃত্যুদন্ড পাওয়া হুজি নেতা মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপনের রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি ফ্যাক্সের মাধ্যমে আমরা হাতে পেয়েছি। সিলেট কারাগারে থাকা দেলোয়ারকে রায় পড়ে শোনানো হয়েছে। প্রাণভিক্ষা চাওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি জানিয়ে তিনি বলেছেন, আইনজীবী ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না, সেটি আগামী সাত দিনের মধ্যে আমাদের জানাতে হবে।

এ মামলায় হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ তিন জঙ্গির রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়। মৃত্যুদন্ড বহাল থাকা অপর দুজন হলেন শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার ওরফে রিপন।পাঁচ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সিলেট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও বিচারিক আদালতসহ (সিলেট) সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, মুফতি হান্নান যদি প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন, তাহলে এর নিষ্পত্তি করতে যতক্ষণ সময় লাগে, তারপর দন্ড কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা না চাইলে কারাবিধি অনুসারে কারা কর্তৃপক্ষ দন্ড কার্যকর করবে।রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ওই তিনজনের করা আবেদন ১৯ মার্চ খারিজ করেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার সকালে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।

২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারের ফটকের কাছে গ্রেনেড হামলায় ঢাকায় নিযুক্ত তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীসহ ৭০ জন আহত হন, নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন। ওই ঘটনায় করা মামলায় ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল জঙ্গিনেতা মুফতি হান্নান, জঙ্গি শরিফ শাহেদুল ও দেলোয়ারকে মৃত্যুদন্ড এবং মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেন। গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায়ে তিনজনের মৃত্যুদ- ও দুজনের যাবজ্জীবন কারাদ- বহাল রাখেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদ- বহাল থাকা আসামিদের আপিল ৭ ডিসেম্বর খারিজ করেন আপিল বিভাগ। এর পূর্ণাঙ্গ রায় গত ১৭ জানুয়ারি প্রকাশ পায়। এরপর আসামিদের মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পাঠানো হয় ও তা পড়ে শোনানো হয়। আসামিরা ২৩ ফেব্র“য়ারি রিভিউ আবেদন করেন, যা ১৯ মার্চ খারিজ হয়।

সরকারের আদেশ পেলেই জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও তার দুই সহযোগীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করতে কারা কর্তৃপক্ষ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন। বুধবার ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের যমুনা ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মৃত্যুদন্ড কার্যকরের নির্বাহী আদেশ এখনো আমাদের হাতে পৌঁছায়নি। ফাঁসি কার্যকরে কারা কর্তৃপক্ষ সবসময়ই প্রস্তুত রয়েছে।

তিন আসামির মধ্যে হরতাকুল জিহাদের শীর্ষ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল রয়েছেন গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে। আরেক আসামি দেলোয়ার ওরফে রিপনকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।তারা মৃত্যুদন্ডের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করলেও আপিল বিভাগ গত ১৯ মার্চ তা খারিজ করে দেয়। মঙ্গলবার সেই রায় প্রকাশের পর বুধবার তা আসামিদের পড়ে শোনায় কারা কর্তৃপক্ষ। সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ২০০৪ সালের ২১ মে ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী গ্রেনেড হামলার মুখে পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই পুলিশের এএসআই কামাল উদ্দিন নিহত হন।এছাড়া পুলিশ কনস্টেবল রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া নামের আরেক ব্যক্তি মারা যান হাসপাতালে। আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অন্তত ৪০ জন ওই ঘটনায় আহত হন।ওই ঘটনায় করা মামলার চূড়ান্ত রায়ে আপিল বিভাগ গত বছরের ৭ ডিসেম্বর তিন আসামির সর্বোচ্চ সাজার রায় বহাল রাখে।এ মামলার বাকি দুই আসামি মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে হাই কোর্ট যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছিল। আপিল না করায় তাদের ওই সাজাই বহাল থাকে।