‘ধন্য মুজিব ধন্য, বাংলা মায়ের মুক্তি এলো এমন ছেলের জন্য’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৯৮তম জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস ২০১৭ উপলক্ষে আজ ১৭ মার্চ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা।

অনুষ্ঠানমালায় ছিল- ভোর ৭টায় একাডেমির কর্মকর্তা, শিল্পী ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ, সকাল ১০টায় শিশুচিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সকাল ১১টায় লিয়াকত আলী লাকী এর পরিকল্পনা গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় নাটক: মুজিব মানে মুক্তি, দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির অ্যাক্রোবেটিক দলের পরিবেশনায় অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী, বিকেল ৫টায় তামান্না তিথীর উপস্থাপনায় শিশুদের সাথে ডা. নুজহাত চৌধুরী ও লিয়াকত আলী লাকীর অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধুর গল্প শোন, বিকেল ৫.৩০টায় শিশুদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যা ৭টায় শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শনী-দি সুজ, মাটির পাখি, মন ফড়িং, রক্তজবা ও মাধো। মুজিব মানে মুক্তি নাটকের কাহিনী সংক্ষেপ এবং আজকের অনুষ্ঠানের ছবি নি¤েœ সংযুক্ত।

দেশব্যাপী বাংলা সংস্কৃতির সঠিক বিকাশ ও চর্চার লক্ষ্যে ৬৪ জেলা শিল্পকলা একাডেমির নাট্য প্রশিক্ষকদের অংশগ্রহণে দুইদিনব্যাপী ‘নাট্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা’র উদ্বোধন,  দেশব্যাপী বাংলা সংস্কৃতির সঠিক বিকাশ ও চর্চার লক্ষ্যে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রশিক্ষকদের আরো দক্ষ করে গড়ে তোলার লক্ষে ১৭ ও ১৮ মার্চ ২০১৭, রোজ শুক্র ও শনিবার ৬৪ জেলার শিল্পকলা একাডেমির নাট্য প্রশিক্ষকদের অংশগ্রহণে দুইদিনব্যাপী ‘নাট্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা’র আয়োজন করছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার হলে আজ সকাল ৯.৩০টায় কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক, শিশুবন্ধু ও নাট্যজন জনাব লিয়াকত আলী লাকী, একাডেমির সচিব জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী এবং প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক শাওকাত ফারুক।

দুইদিনব্যাপী কর্মশালায় প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন আবৃত্তি শিল্পী মীর বরকত, নাট্যজন কামাল উদ্দিন কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খন্ডকালিন শিক্ষক সাইদুর রহমান লিপন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. ইসরাফিল আহমেদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম প্রামাণিক, নৃত্যশিল্পী তামান্না রহমান এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।

মুজিব মানে মুক্তি: লোক নাট্যদল (সিদ্ধেশ্বরী) পরিকল্পনা, গ্রন্থনা, নাট্যায়ন ও নির্দেশনা: লিয়াকত আলী লাকী।

গল্পসংক্ষেপ:
বঙ্গবন্ধুর মহান সংগ্রামী জীবন-ভিত্তিক ঐতিহাসিক নাট্যআখ্যান ‘মুজিব মানে মুক্তি’। আবহমান বাংলার হাজার বছরের ইতিহাস, সংস্কৃতি, শোষণ-বঞ্চনা, দ্রোহ ও মুক্তির স্বপ্ন বিনির্মাণ এই নাটকের মূল উপপাদ্য। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, তেইশ বছরের পাকিস্তানি অপশাসন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরে দেশ গঠন এবং তার মহাপ্রয়াণ এই নাটকের উপাত্ত।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন, সংগ্রাম ও মহাপ্রয়াণভিত্তিক রাজনৈতিক আলেখ্য ‘মুজিব মানে মুক্তি’তে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ধারাবাহিক ইতিহাসের সাথে বঙ্গবন্ধুর শৈশব, কৈশোর, যৌবন, মহান সংগ্রামী জীবন ও মহাপ্রয়াণ ক্রমান্বয়ে সন্নিবেশিত হয়েছে। পাক-হানাদারদের সহযোগী যুদ্ধাপরাধীদের হিংস্র চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে নাটকটিতে। তাই ‘মুজিব মানে মুক্তি’ নাটকটি ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর জীবন নিয়ে রচিত বিশেষ প্রযোজনা।

নির্দেশকের কথা:
ইতিহাস নির্ভর নাট্য নির্মাণ চিরকালই কঠিন কাজ। আর একজন মহাপুরুষের সংগ্রামী জীবন নিয়ে শিল্প নির্মাণ আরো কঠিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবন দর্শন, রাজনৈতিক দর্শন, স্বপ্ন ও সংগ্রাম, তাঁর বিভিন্ন সময়ের বক্তৃতার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে। কর্মের ভেতর দিয়ে তার দেশপ্রেম, একটি জাতির মুক্তির পথ নির্মাণ এবং বাংলা নামে দেশ স্থাপন সংগীত, কোরিওগ্রাফ ও কবিতার মধ্য দিয়ে উপস্থাপিত হয়েছে। ফিজিক্যাল থিয়েটারের উপাদান এবং বিভিন্ন ইমেজ ব্যবহার করতে হয়েছে ইতিহাস এবং মহামানবের জীবন, স্বপ্ন ও সংগ্রামের ছবি আঁকতে গিয়ে। ইতিহাসের শিল্পিত উপস্থাপন ও জাতির পিতার একটি জাতি ও দেশ নির্মাণ ও তাঁর মহাপ্রয়াণে নিরীক্ষাধর্মী শিল্প শৈলী, নানা ইমেজ ও কোরিওগ্রাফের ভেতর দিয়ে উপস্থাপনই এই প্রযোজনার মূল কর্ম। ইতিহাসের সত্যের চেয়ে শিল্পের সত্য অনেক বেশি শক্তিশালী। একটি আবেগ আশ্রিত কাব্যিক শিল্প উপস্থাপন ‘মুজিব মানে মুক্তি’।

কুশীলব:
জিয়াউদ্দিন শিপন, নাবিল আহমেদ, আবির হোসেন অঙ্কন, আজিজুর রহমান সুজন, জুলফিকার আলী বাবু, মিজানুর রহমান, মূসা রুবেল, আমিনুল ইসলাম অহন, রাসেল রানা রাজু, তাজুল ইসলাম, মরিয়াম খান এ্যানি, আক্তার হোসেন, খাদিজা মোস্তারী মাহিন, হাবিবুর রহমান, মুক্তা আক্তার, নুর নবী, মারিয়াম আক্তার, পলি কুজুর, মোমিনুল ইসলাম, প্রিয়াংকা বিশ্বাস মেঘলা, মোঃ শাহ আলম সরকার (রঞ্জু), সুজন মাহাবুব, মুমু মাসুদ, আজমেরী এলাহী নীতি, শিল্পী এলাহী প্রমুখ।

সংগীত:
ইয়াসমীন আলী, মাহাবুব রাব্বী তনয়, ঈশিতা চাকী, মোঃ আব্দুল্লাহেল রাফী তালুকদার, এম এ মোমিন, শাহানাজ আক্তার, তালবিদা আলী মীম, মোঃ সোহানুর রহমান, রোকসানা আকতার রুপসা, রাই কৃষ্ণ দাস, সুচিত্রা রানী সূত্রধর।

শব্দ প্রক্ষেপণ : শাহরিয়ার কামাল।