জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামানকে গ্রেফতার করেছে দূর্নীতি দমন কমিশন (দূদক)। বিধিবহির্ভূতভাবে সিলেকশন গ্রেড প্রদান করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সোমবার ভোরে তাকে ঢাকার মিরপুর এলাকার বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এনিয়ে ওই মামলায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ইতোপূর্বে গ্রেফতারকৃত অপর তিনজন আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। এদিকে, বদরুজ্জামানকে গ্রেফতারের খবরে তার সহকর্মীরা সোমবার উপাচার্যের কাছে ক্ষোভ জানিয়েছেন।

দূদকের সহকারি পরিচালক মোঃ ফজলুল বারী জানান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে বিধি বহির্ভূত ভাবে সিলেকশন গ্রেড প্রদান করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান এ মামলার এজহারভুক্ত আসামী। সোমবার ভোরে উপ-পরিচালক মোরশেদ আলমের নেতৃত্বে দুদক ঢাকার মিরপুর এলাকায় বদরুজ্জামানের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। মামলায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহসহ মোট ১৩ জনকে আসামি করা হয়। এদের মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তাওহীদ জামান শিপু, অর্থ ও হিসাব বিভাগের সহকারি পরিচালক (বেতন ও কল্যাণ) শেখ মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসাইন ও সহকারী রেজিষ্ট্রারার সিদ্দিকুর রহমানকে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মিরপুর এলাকা থেকে দুদক গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত ৩জন আদালতের মাধ্যমে অন্তবর্তীকালীন জামিন লাভ করেন।

এদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও পরামর্শ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. ফয়জুল করিম জানান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের গ্রেপ্তারের খবর শুনে তার সহকর্মীরা সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুরস্থ উপাচার্যের কার্যালয়ে জমায়েত হয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন। এসময় তারা জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। সহকর্মীরা এসবের দ্রুত সমাধান চান এবং ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিতকরণ ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দ্রুত মুক্তির ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

গাজীপুরে কর্মরত দুদকের আইনজীবী মোঃ এনামুল হক জানান, ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়, সরকারের নিষেধাজ্ঞার পরও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গণনিয়োগ’ পাওয়া ১৬৯ জন কর্মচারীকে অবৈধভাবে সিলেকশন গ্রেড দিয়ে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে সরকারের এক কোটি ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৩৯৪ টাকা আত্মসাত করেছে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক মো. হাফিজুর রহমান ও সহকারি কলেজ পরিদর্শক এমএইচ এম এ শাহজাহান বাদি হয়ে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক আরো দু’টি মামলা দায়ের করেন। মামলাগুলো দুদক তদন্ত করছেন।

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর।