চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার একটি বাড়ি থেকে ২৯টি গ্রেনেডসহ বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মীনা ঘটনাস্থল থেকে দেওয়া এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।এ ঘটনায় এক নারীসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে বলে সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়। তাঁদের মধ্যে জসীমউদ্দিন ও হাসানকে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার খাঁদগড় এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস থেকে আটক করে পুলিশ। জসীমউদ্দিন ও হাসান কুমিল্লার চান্দিনায় ওই বাসে তল্লাশি চলাকালে পুলিশের ওপর বোমা হামলা চালান। পরে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নারীর পরিচয় এখনো জানানো হয়নি।
জসীমউদ্দিন ও হাসানের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ ভোররাতে রিদওয়ান ভবন’ নামের ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এই বাড়িতেই থাকতেন তাঁরা। ঢাকা ও চট্টগ্রাম পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ যৌথভাবে এ অভিযানে অংশ নেয়।নুরে আলম মীনা জানান, বাড়িটি থেকে ছোট-বড় ২৯টি গ্রেনেড, ৭টি কালো পাঞ্জাবি, আরবি অক্ষরে লেখা কালো রঙের একটি ব্যানার, ছোট-বড় ৯টি চাপাতি, ২৮০ প্যাকেট বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও ৪০ প্যাকেট জেল উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি জানান, এ ঘটনায় মিরসরাই থানায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। ইতিমধ্যে আটজন জঙ্গির নাম পাওয়া গেছে। এসব জঙ্গি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে সাময়িক সময়ের জন্য আস্তানা গড়ে তোলে।পুলিশের কাউন্টার টেররিজম দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে গ্রেনেডসহ বিস্ফোরক দ্রব্য ধ্বংস করবে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশ সুপার বলেন, জঙ্গি আস্তানা গড়ে তুলতে বাড়িটি ভাড়া নেওয়া হয়। ভাড়া নেওয়ার সময় জঙ্গিরা নিজেদের কাপড়ের ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দেন। নিজেদের নাম কামাল ও মাহমুদ বলে জানান। এ নামেই ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দেন বাড়ির মালিকের কাছে। প্রেস ব্রিফিং চলাকালে উপস্থিত ছিলেন র্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের অধিনায়ক শাফায়াত জামিল ফাহিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মশিউদ্দৌলা রেজা, মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিয়া আহমদ সুমন, সহকারী পুলিশ সুপার (মিরসরাই) মাহবুবুর রহমান, মিরসরাই উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইয়াসমিন আক্তার কাকলি, মিরসরাই পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন, মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইরুল ইসলাম প্রমুখ।এ সময় বাড়ির মালিক রিদওয়ান উদ্দিন জানান, গত ফেব্র“য়ারি মাসে তাঁর দোতলা ভবনের নিচতলার একটি ইউনিট ভাড়া দেন। শিশুসহ এক নারী এবং দুজন পুরুষ বাসাটি ভাড়া নেন।
গত ২৭ ফেব্র“য়ারি শিশুসহ ওই নারী বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে চলে যান। গত সোমবার পুরুষ দুজনও বাসা থেকে বের হন। তাঁরা আর ফেরেননি। পরে জানা গেল, তাঁরা জঙ্গি এবং কুমিল্লার চান্দিনায় তাঁরা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন।