দুই চালকের সাজার রায়ের পর পরিবহন ধর্মঘটে জনভোগান্তির কথা তুলে ধরে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।তিনি বলেছেন, পরিবহন ড্রাইভারদের অবহেলার কারণে প্রতিদিন অগণিত মানুষ নিহত হচ্ছে। কথায় কথায় ধর্মঘট করে তারা জনগণকে জিম্মি করে ফেলে। সরকারকে তা দমন করতে হবে। তাদের আন্দোলনের হুমকিতে ভীত হলে চলবে না।মঙ্গলবার জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে দলীয় এক অনুষ্ঠানে পার্টি চেয়ারম্যান এরশাদের এ মন্তব্য আসে। মানিকগঞ্জে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহতের ঘটনায় এক বাস চালকের যাবজ্জীবন সাজার রায় হওয়ায় রোববার থেকে খুলনা বিভাগের দশ জেলায় পরিবহন ধর্মঘট চলছিল।এর মধ্যে সাভারে ট্রাকচাপা দিয়ে এক নারীকে হত্যার দায়ে সোমবার ঢাকার আদালত ট্রাক চালকের ফাঁসির রায় দিলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন মঙ্গলবার সকাল থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির কর্মসূচি শুরু করে।
তাদের এই কর্মসূচির কারণে সারা দেশে দূরপাল্লার যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। গাড়ি না পেয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীরাদের।সাবেক সেনা শাসক এরশাদ বলেন, আমি ক্ষমতায় থাকার সময় পরিবহন ড্রাইভারের অবহেলার কারণে কোনো মানুষের মৃত্যু হলে মৃত্যুদন্ডের বিধান করেছিলাম। সে আইন রাখতে পারে নাই। বর্তমান আইনে রয়েছে যাবজ্জীবন কারাদন্ড। তাও বহাল রাখা যাবে কি না সন্দেহ।আইন বাস্তবায়ন করতে পারলে সড়ক দুর্ঘটনার হার অনেক কমবে বলে সাবেক এই রাষ্ট্রপতির ধারণা।অনুষ্ঠানে খুলনার ব্যাবসায়ী সৈয়দ খায়রুল ইসলামের নেতৃত্বে বিভিন্ন দল থেকে আসা দুই শতাধিক নেতা-কর্মী জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।তাদের অভিনন্দন জানিয়ে এরশাদ বলেন, আমার মনে অনিশ্চয়তা ছিল। এখন আলো দেখতে পাচ্ছি। যেভাবে জাতীয় পার্টিতে যোগদান চলছে, তাতে আমি বিশ্বাস করি, আমরাই আগামীতে সরকার গঠন করতে পারব।দল সংসদে বিরোধী দলে থাকার পরও প্রধানমন্ত্রীর দূতের দায়িত্ব পালন করে আসা এরশাদ বলেন, দেশবাসী শান্তিতে নেই। নেতাকর্মীদের তিনি বলেন, মনে রেখ, তোমরাই জাতীয় পার্টির প্রাণ। মানুষের কাছে তোমরাই জাতীয় পার্টিকে নিয়ে যাবে। মানুষ শান্তি চায়, নিরাপত্তা চায়, পরিবর্তন চায়। এদেশকে আবার উন্নয়নের জোয়ারে ভাসাতে হলে, শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে জাতীয় পার্টিকে অবশ্যই আবার ক্ষমতায় যেতে হবে। প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়ের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে দলের কো চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, এসএম ফয়সল চিশতী, খালেদ আক্তার ও জাহিদ বিপ্লব অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।