পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ও মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত খুনি নুর চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য কানাডার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনলে বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান হবে। তাঁকে ফিরিয়ে আনলে তা দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় মাইলফলক হবে।শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ-কানাডা সম্পর্কের ৪৫ বছর পূর্তিতে আয়োজিত এক সংলাপের উদ্বোধনী অধিবেশনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় শাহরিয়ার আলম এ কথা বলেন।কানাডা হাইকমিশনের সহায়তায় ইনস্টিটিউট ফর পলিসি, অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (আইপিএজি) ওই আলোচনার আয়োজন করে।উদ্বোধনী অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান ও বাংলাদেশে কানাডার সাবেক হাইকমিশনার রবার্ট ম্যাকডুগাল। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তৃতা দেন আইপিএজির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনির খসরু। আলোচনা সভায় শাহরিয়ার বলেন, তাকে (নূর চৌধুরী) ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। এর মাধ্যমে দায়মুক্তির সংস্কৃতির অবসান হবে।
কানাডা বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে মৃত্যুদন্ড পাওয়া নূরকে বহিষ্কার করে বাংলাদেশে পাঠালে তা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ‘যুগান্তকারী সাফল্য’ হিসেবে বিবেচিত হবে বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।বঙ্গবন্ধুর এই আত্মস্বীকৃত খুনি অনেক দিন ধরেই কানাডায় পালিয়ে আছেন। বাংলাদেশ বেশ কয়েকবার তাকে ফেরত চাইলেও, আইনের দোহাই দিয়ে কানাডা তা করতে রাজি হচ্ছে না। দেশটির আইন অনুযায়ী, আশ্রিত যে অভিবাসী নিজ দেশে মৃত্যুদ-ের মুখোমুখি হতে পারে তাকে ফেরত দেওয়ার সুযোগ নেই।যদিও গত বছর কানাডা সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছিলেন, কানাডা নূর চৌধুরীর প্রত্যাবসনের বিষয়ে আলোচনায় সম্মত হয়েছে।বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম পশ্চিমা দেশ কানাডার সঙ্গে ১৯৭২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্কের সূচনা হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় তখনকার কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে এলিওট ট্রুডো বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। যে কারণে পরে তাকে ‘ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার’ পদকে ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার। গত বছর শেখ হাসিনার সফরের সময় পিয়েরে ট্রুডোকে দেওয়া ওই পদক তার ছেলে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর হাতে তুলে দেওয়া হয়।২০১৬-র ওই সফর বাংলাদেশ ও কানাডার সম্পর্কে ‘নতুন উদ্যম’ সৃষ্টি করেছে বলেও শনিবারের আলোচনায় মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।গত বছর কানাডা ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যার বেশিরভাগই হয়েছে দেশটিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের শুল্ক-মুক্ত রপ্তানির মাধ্যমে।
আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, বাংলাদেশে কানাডার হাইকমিশনার বেনোয়া পিয়েরে ল্যারামিস, সাবেক দূত ও গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক নির্বাহী পরিচালক রবার্ট ম্যাকডুগালও উপস্থিত ছিলেন।