রাজশাহীর তানোরে লিচু’র গাছে গাছে মুকুলের সমারোহ। গাছ গুলোতে সোনালী হলুদ মুকুলে ব্যাপক ভাবে শোভা পাচ্ছে। কোন কোন লিচু গাছে পাতা পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। লিচু চাষিরা গাছ ও মুকুলের যতেœ ব্যাস্থ্য সময় পার করছেন।

তানোর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলার ৭০হেক্টর জমিতে লিচু বাগান রয়েছে। এখন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ না করলেও যে ভাবে মুকুল দেখা যাচ্ছে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বারের চেয়ে দ্বিগুণ লিচু উৎপাদন হবে বলে ধারাণা করছে কৃষি অফিস। এবারে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়াগত কারণে পর্যাপ্ত মুকুল আসতে দেরি হলেও এখন প্রতিটি গাছে মুকুল দেখা যাচ্ছে। তবে, বড় আকারের গাছের মুকুলের চেয়ে ছোট ও মাঝারি গাছে বেশি মুকুল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে এবার লিচু গাছে মুকুল দেখা যাচ্ছে। লিচু মুকুলের মৌ মৌ গন্ধের সুবাসে বাতাস ভরে উঠতে শুরু করেছে। আর তার সাথে দেখা দিয়েছে লিচু চাষিদের চোখে সোনালী স্বপ্ন।
তানোর উপজেলার বেলপুকুরিয়া গ্রামের লিচু চাষি আব্দুস সালাম বলেন, মুকুল বের হতে যে তাপমাত্রা প্রয়োজন বাতাসে সে তাপমাত্রা বিরাজ করছে। ফলে লিচু গাছে বেশি মুকুল ধরার আশা করছেন লিচু চাষীরা। আবার যদি হঠাৎ করে তাপমাত্রা বেড়ে যায় তাহলে মুকুলের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্টের আশঙ্কা দেখা দিবে। যার কারণে ফলনও ব্যাহত হতে পারে। আবার আগাম ফোটা মুকুলের গুটি দেখা মিলবে তড়িৎ। মৌসুমের শুরুতেই তানোরে লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন আসবে বলে ধারণা করছে লিচু চাষিরা। তাইতো লিচু চাষিদের মুখে হাসি বুকে রঙিন স্বপ্ন বাসা বেধেছে। মনে লেগেছে আনন্দের ঢেউ। আর কয়েক দিন পর থেকে বের হওয়া গুটির যতেœ মেতে উঠবে চাষিরা। এনিয়ে তানোর উপজেলার তালন্দ ইউনিয়নের কালনা গ্রামের লিচু চাষী আব্দুর রহিম বলেন, লিচু গাছে মুকুল বের হয়েছে। আর মুকুল আসার আগে থেকেই লিচু বাগানের পরিচর্যা করেছেন তিনিসহ এ অঞ্চলের অনেক লিচু চাষিরা। গাছের গোড়ায় সার পানি সেচ বের হওয়া মুুকুলে কীটনাশক ¯েপ্র, বাগান পরিষ্কারসহ বিভিন্ন পরিচর্যায় এখনো ব্যাস্থ্য রয়েছেন তার মত অনেকে। এখন আবারো পরাগায়ন নিশ্চিত করতে এবং মুকুল পুড়ে যাওয়া রোধ করতে ওষধ ¯েপ্র করবেন বলে জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, এ উপজেলা খরা প্রবণ এলাকা। অন্যান্য উপজেলার চেয়ে অনেক উচুঁ এলাকা হওয়ায় পানির স্তর অনেক নিচে থাকে। ফলে এ অঞ্চলের মাটি অত্যান্ত কড়া। যার কারণে অন্য এলাকার লিচুর চেয়ে এ উপজেলার লিচুর স্বাদ একটু বেশি। তানোর উপজেলার কৃষি অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, এবছর তানোরে লিচুর বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যেকান সময় এ্যানথাস জোনিত রোগ হতে পারে সেজন্য লিচু গাছে পরিচর্যা নেয়ার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তার জন্য প্রতিটি চাষিকে কার্বোডাজিং গ্রুপের ঔষুধ ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সাইদ সাজু, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি