বিশ্বের সব ব্যবসায়িক কার্যক্রম চলে এসেছে ডিজিটাল সিস্টেমের আওতায়। বাংলাদেশেও ব্যবসায়িক কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়েছে অনলাইনে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার ভ্যাট কার্যক্রমও শুরু হচ্ছে অনলাইনে।ভ্যাট দিতে নতুনভাবে নিবন্ধনে ইচ্ছুক ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সনাতনী পদ্ধতিতে নিবন্ধন থাকা ব্যবসায়ীদেরও এবার অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন করতে হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন করবে না তাদের সব কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বলছে, আগামী ১৫ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন কার্যক্রম। এটা শেষ হবে ৩০ জুন। তবে সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন করতে হবে না। যেসব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বছরে ৩০ লাখ টাকার বেশি লেনদেন করে, তাদের অনলাইনে এ ভ্যাট নিবন্ধন করতে হবে। প্রথম পর্যায়ে ৫০ হাজার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে। এনবিআরের একটি সূত্র মতে, ভ্যাট অনলাইনের ওয়েবসাইটে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অন্য শাখার ঠিকানা, ব্যাংক হিসাব নম্বর, ব্যবসার ধরন, ব্যবসা শুরুর তারিখ, বিদ্যমান ভ্যাট নম্বর থাকলে তার তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ব্যবসায়ে তাদের অংশের তথ্যও দিতে হবে নিবন্ধনকালে। কেউ চাইলে ভ্যাট কমিশনারেটের কার্যালয়ে গিয়েও অনলাইন নিবন্ধন করতে পারবেন। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর।

এনবিআরের আরেকটি নির্ভরশীল সূত্র বলছে, অতীতে ভ্যাট আদায়ের নিবন্ধন দেওয়া হতো সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিস থেকে এবং সেই ভ্যাটের নম্বর ছিল ১১ সংখ্যার। কিন্তু অনলাইন সিস্টেমে নিবন্ধনের ক্ষেত্রে একটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখানে সার্কেল অফিসের পরিবর্তে কেন্দ্রীয়ভাবে এনবিআর থেকে নিবন্ধন নম্বর দেওয়া হবে এবং তা হবে ৯ সংখ্যার। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, আগামী ১৫ মার্চ থেকে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হবে। এনবিআরের পক্ষ থেকে সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন করতে চিঠি দিয়ে অবহিত করা হবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান জানিয়ে দেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা কোনো লেটার অব ক্রেডিট বা এলসি খুলতে পারবে না। এমনকি নতুন অ্যাকাউন্টও খুলতে পারবে না, খোলা যাবেও না। কারণ, ভ্যাট অনলাইনের সফটওয়্যার এমনভাবে ইনস্টল করা হয়েছে, যদি কোনো প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন না করে তাহলে ৩০ জুনের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের আমদানি-রপ্তানিসহ সকল কার্যক্রম এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে। নজিবুর রহমান বলেন, প্রত্যেকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন করতে পর্যাপ্ত সময় পাবে। আমরা কখনো চাই না কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাক। আমরা চাই দেশের অর্থনীতির ক্রমশ সামনের দিকে এগিয়ে যাক। এজন্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আমাদের বৈঠকও হবে।