সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে কারও সঙ্গে কোনো আপস না করার অঙ্গীকার করেছেন নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।বুধবার শপথ নেওয়ার পর কর্মস্থল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে তিনি আপসহীন থাকবেন।বিএনপির প্রশ্নের মধ্যে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ পেয়ে বাংলাদেশের দ্বাদশ সিইসি হিসেবে শপথ নিলেন সাবেক আমলা নূরুল হুদা।
তার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার হয়েছেন সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ কবিতা খানম ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী।দুপুরের পর প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে শপথ নেওয়ার পর বিকালে সহকর্মীদের নিয়ে আগারগাঁওয়ে নতুন নির্বাচন ভবনে যান নূরুল হুদা। সিইসির কক্ষে তাদের অভ্যর্থনা জানান ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।এরপর সবাইকে নিয়ে সিইসি হিসেবে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে আসেন নূরুল হুদা।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বুধবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে সিইসি ও চার নির্বাচন কমিশনারকে শপথ পড়ান।সিইসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সাবেক সচিব কে. এম নুরুল হুদা। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, সাবেক সচিব মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী এবং এবারই প্রথম একজন নারী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ কবিতা খানম। সিইসি নূরুল হুদাসহ নতুন কমিশনের সদস্যরা বেলা ২ টা ৫০ এর মধ্যেই জাজেস লাউঞ্জে পৌঁছে যান। প্রধান বিচারপতি আসেন বিকাল ঠিক ৩টায়। তিনি প্রথমে শপথ পড়ান সিইসি কে এম নূরুল হুদাকে। সিইসি শপথ নামায় সই করার পর তাকে অভিনন্দন জানান প্রধান বিচারপতি।এরপর একইভাবে একে একে মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে শপথ নেন।শপথ পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম। নতুন ইসি গঠনের জন্য সার্চ কমিটির নেতৃত্ব দেওয়া বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ছাড়াও আপিল বিভাগের বিচারক এবং সুপ্রিম কোর্ট, নির্বাচন কমিশন এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন এ অনুষ্ঠানে।
গত ৬ ফেব্র“য়ারি সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় প্রজ্ঞাপন জারি শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।এর আগে দশ জনের নামের চূড়ান্ত তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তর করে সার্চ কমিটি। সেখান থেকে পাঁচ জনকে চূড়ান্ত করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্দেশ্যে দশ জনের নামের তালিকা হস্তান্তর করে সার্চ কমিটি। ওই তালিকা থেকে যাচাই-বাছাই করে নতুন নির্বাচন কমিশনে পাঁচ জনকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।এরপর প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ওই পাঁচজনের নাম ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
পরে রাত সাড়ে ৯টায় সচিবালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, এদের মধ্যে সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদারকে বিএনপির প্রস্তাবিত নাম থেকে নেয়া হয়েছে আর বেগম কবিতা খানমের নাম প্রস্তাব করেছিল আওয়ামী লীগ।এর আগে বিকেল ৪টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবিত তালিকা থেকে দশ জনের নাম চূড়ান্ত করে রাষ্ট্রপতি কাছে হস্তান্তর করে সার্চ কমিটি।এদিকে, বর্তমান সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ ও তার কমিশনারদের মেয়াদ শেষ হয়েছে ৮ ফেব্র“য়ারি। নিয়ম অনুযায়ী ৭ ফেব্র“য়ারি মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন তিনি।সাবেক সচিব কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্েযর এই কমিশনের অধীনেই আগামী পাঁচ বছর জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের সব ভোট হবে। ২০১৯ সালের শুরুতে তাদের অধীনেই হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।