নতুন নির্বাচন কমিশন-ইসিকে শক্তিশালী করতে সহায়তা দিতে প্রস্তুত ইউরোপিয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ ব্যাপারে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাওয়া গেলে তা বিবেচনায় নেবে তারা।
ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদু আজ সোমবার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে একথা জানান।
তিনি বলেন, কাদের নিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হচ্ছে তা কয়েকদিনের মধ্যেই জানা যাবে। নতুন এই কমিশনকে বসে নিজেদের মধ্যে আলোচনার সুযোগ দিতে হবে। তারা আগ্রহ প্রকাশ করলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও দাতা সংস্থার সাথে ইইউও সহায়তার জন্য এগিয়ে আসবে। তবে এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশন নিয়ে ইইউ’র কোনো প্রকল্প নেই।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কক্সবাজার থেকে হাতিয়া সংলগ্ন ঠেঙ্গারচরে সরিয়ে নেয়ার সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, এই উদ্যোগটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এর বিস্তারিত জানতে আমরা আগ্রহী। এ ব্যাপারে সহায়তা চাইলে অবশ্যই আমরা তা বিবেচনায় নিতে রাজি আছি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে ইইউ বরাবরই উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। এই ইস্যুতে আমাদের সমর্থন থাকবে। আমরা মিয়ানমার সরকারকে পরিষ্কার করে জানিয়েছি, সেখানে যা ঘটছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
অনেক চ্যালেঞ্জ সত্বেও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান মায়াদু।
প্রসঙ্গত, গত রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দেয়া এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ঠেঙ্গারচরে সরিয়ে নেয়ার সরকারের সিদ্ধান্তের কথা বিদেশী কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের জানান এবং এই উদ্যোগের সবার সহযোগিতা চান।
এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চরটিকে বসবাস উপযোগী করে গড়ে তুলতে সরকার আশ্রয়কেন্দ্র, চিকিৎসাকেন্দ্র, স্কুল, মসজিদ, সড়কসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সুবিধা নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড শেষ হওয়ার পরই রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের কক্সবাজার থেকে সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
ফরেন ডোনেশন অ্যাক্টে মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত বিধান সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে নাগরিক সমাজের ক্ষমতায়ন ইইউ’র অগ্রাধিকার। বাংলাদেশ সরকার ও নাগরিক সমাজের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কাঠামোগত অংশীদারত্ব জোরদার করার জন্য ইইউ এক কোটি ৩০ লাখ ইউরোর প্রকল্প হাতে নেবে। এ প্রকল্পের লক্ষ্য হবে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে নীতিগত ইস্যুগুলোতে এনজিওদের অবস্থান শক্তিশালী করা, সরকার ও নাগরিক সমাজের প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনগণের কাছে আরো বেশি জবাবদিহি করা এবং জনপ্রশাসন ও নাগরিক সমাজের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সংলাপ উৎসাহিত করা।