গাজীপুরে পরকিয়ার জের ধরে গৃহবধুকে হত্যার ঘটনায় একজনের ফাঁসির দন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। দন্ডপ্রাপ্ত আসামি কালু মিয়া গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বাসন চান্দপাড়া এলাকার আব্দুল মান্নান ওরফে মনা চৌধুরীর ছেলে।মঙ্গলবার গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও জজ প্রথম আদালতের বিচারক মোঃ ফজলে এলাহী ভূইয়া এ রায় প্রদান করেন। রায়ে একই সঙ্গে আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং মামলার অপর একটি ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় একই এলাকার নাছির আলী গাইনের ছেলে নাজিম উদ্দিন ও জালাল উদ্দিন এবং কান্দুর আলীর ছেলে ফজলুল হককে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।

গাজীপুর আদালতের ইন্সপেক্টর মো. রবিউল ইসলাম জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের চান্দপাড়া এলাকার মৃত সোনা মিয়ার মেয়ে ভিকটিম করিমন নেছার একই এলাকার চান মিয়ার সঙ্গে প্রায় ২০ বছর আগে বিয়ে হয়।বিয়ের পর একই এলাকার আবুল কালাম ওরফে কালুর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে করিমন নেছার।এক পর্যায়ে ভিকটিম করিমন নেছা তার স্বামী চান মিয়াকে তালাক দেয়। ঘটনাটি ভিকটিমের পরিবার মেনে নিচ্ছিল না। এক পর্যায়ে ১৯৯৯সালের ১২ জানুয়ারি মায়ের সঙ্গে রাগ করে করিমন নেছা তার বোন রহিমননেছার বাড়িতে চলে যায়। বোনের বাড়িতে ইফতার খেয়ে রাত সাড়ে সাতটার দিকে বাপের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় করিমন নেছা। এর পর থেকে সে নিখোঁজ ছিল। বিভিন্ন স্থানে তাকে খোঁজ করেও সন্ধান মেলেনি। পরে ওই বছরের ২৫ জানুয়ারি দুপুরে ভিকটিমের বাবার বাড়ির কাছে একটি পুকুরে কচুরিপানার নিচে তার লাশের সন্ধান মিলে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই সফিজ উদ্দিন বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জয়দেবপুর থানার ওসি দীর্ঘ তদন্ত শেষে আবুল কালাম ওরফে কালু মিয়াসহ একই এলাকার নাছির উদ্দিনের ছেলে নাজিম উদ্দিন ও জালাল উদ্দিন এবং কান্দুর আলীর ছেলে ফজলুল হককে অভিযুক্ত করে থানায় চার্জশীট দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানী শেষে মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করা হয়। মামলায় ৮জন স্বাক্ষীর সাক্ষ গ্রহণ করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি মোঃ আতাউর রহমান, আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর ও আব্দুর রশীদ।

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর।