সিরিয়া, ইরাক, ইরানসহ বেশ কিছু মুসলিমপ্রধান দেশের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জারি করা নির্বাহী আদেশ স্থগিত করে দিয়েছেন স্থানীয় আদালত।একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে নিউইয়র্কের ফেডারেল আদালত স্থানীয় সময় শনিবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে এ স্থগিতাদেশ দেন। আবেদনটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশ বাস্তবায়ন আপাতত স্থগিত থাকবে। এর ফলে ওই মুসলিম দেশগুলো থেকে শরণার্থী ও প্রবেশে আর বাধা থাকলো না। বাধা থাকছে না ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের পরপরই তা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দর বা অন্যান্য ট্রানজিট রুটে আটকা পড়ে যাওয়া ১০০-২০০ বা শরণার্থী প্রবেশে।

শুক্রবার ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশের পর নিউইয়র্ক সিটির জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক হন ইরাকের দুই নাগরিক। তাদের পক্ষেই ফেডারেল আদালতে আবেদনটি করেন মানবাধিকার সংগঠন ‘দ্য আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়ন’ ও আরও কয়েকটি শরণার্থী সহায়তা সংস্থা।আবেদনে তারা ট্রাম্পের ওই আদেশকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা চেয়ে এটির বাস্তবায়ন ঠেকাতে আদালতের হুকুম প্রত্যাশা করেন। শুনানির পরই আদালত আবেদনটির পুরোপুরি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই আদেশ বাস্তবায়নের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে দেন। এ আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি হবে ফেব্র“য়ারির শেষে।

আমেরিকান সংবাদমাধ্যম বলছে, ক্ষমতা নেওয়ার সপ্তাহ পার হতেই প্রেসিডেন্টকে এই প্রথম সাংবিধানিক বিপত্তির মুখে পড়তে হলো।ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে মার্কিন মুলুকে ৪ মাসের যেকোনো ধরনের শরণার্থী প্রবেশ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। আর সিরিয়ার ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা জারি হয় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত। ট্রাম্প তার আদেশে সিরিয়া ছাড়াও মুসলিমপ্রধান আরও ৬টি দেশের ভিজিটর বা দর্শনার্থী প্রবেশ পর্যন্ত বন্ধ করে দেন ৩ মাসের জন্য। সে ৬টি দেশ হলো ইরাক, ইরান, ইয়েমেন, লিবিয়া, সোমালিয়া ও সুদান। এদিকে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশটি জারির পর এর প্রতিবাদে এবং বিমানবন্দরগুলোতে আটকে পড়া ও শরণার্থীদের সসম্মানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ দিতে দেশটিজুড়ে বিক্ষিপ্ত বিক্ষোভ চলছে। বিশেষত বিক্ষোভকারীরা বিমানবন্দরগুলোর সামনে জড়ো হয়ে আটকে পড়া অভিবাসী-শরণার্থীদের মুক্তি চাইছেন। আদালতের এই স্থগিতাদেশ শোনার পর সব বিক্ষোভ-আন্দোলনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা হয়। একইসঙ্গে আটকে পড়াদের মুক্তি দাবি করা হয়।যদিও নির্বাহী আদেশের পর ট্রাম্প দাবি করেন, তার এ আদেশ মুসলিমদের ওপর নিষেধাজ্ঞা নয়। তিনি বলেন, এটা (নির্বাহী আদেশ) ভালোমতোই কাজ করছে। দেখো বিমানবন্দর এবং অন্যান্য স্থানেও।আদালতের এই স্থগিতাদেশের পর হোয়াইট হাউসের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা এই আদেশ দেখেনি।