জলবায়ূ পরিবর্তনের প্রভাবের পাশাপাশি মানবসৃষ্ট বিপর্যয়ে নদী তার নাব্যতা হারাচ্ছে। এছাড়া দখল-দুষণ তো আছেই। বিশেষজ্ঞের মতে নদীর পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ পর্যায়ে পৌছেছে। যার প্রভাব জনজীবনে প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। একশন এইড বাংলাদেশের পরিসংখ্যানমতে বাংলাদেশে নদী-উপনদীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৭০০টি। শতবছর আগে এর সংখ্যা ছিল দ্বিগুন। মানুষের অমানবিক কাজে নদী হারাচ্ছে নাব্যতা। ফলে কমে যাচ্ছে নদীর সংখ্যা।
বৃহস্পতিবার একশনএইড আয়োজিত ‘জল ও জনতন্ত্র’ শীর্ষক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে এসব মন্তব্য করেন বিশেষজ্ঞজন। সঙ্গে দেশের নদীগুলোর দূরাবস্থার চিত্র তুলে ধরা হয়। কলাপাড়ার পাখিমারা বাজার সংলগ্ন পানি জাদুঘর মিলনায়তনে ‘জল ও জনতন্ত্র’ বিষয়ে সাধারণ মানুষ গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা বলেন, নদী উন্নয়নে তৃণমূলের জ্ঞান কাজে লাগাতে হবে। পাশাপাশি তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতের মাধ্যমে নদীর অধিকার, পানির অধিকার ও সঠিক পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা সম্ভব হবেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উপকূলীয় জনকল্যাণ ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবেদীন, ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ পার্লামেন্টের ফাউন্ডার এবং সিইও সোহানুর রহমান, একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির, কেন্দ্রীয় কৃষক মৈত্রী-র সভাপতি আলাউদ্দিন শিকদার, পানি জাদুঘরের কিউরেটর লিপি মিত্র, নেপালের মহিলা অধিকার মঞ্চের উপদেষ্টা সাবিত্রি পোখারেল, ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট নাসির মাহমুদ, সমাজ উন্নয়ন কর্মী রফিক বিশ^াস প্রমুখ। সভাপতির বক্তব্যে ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘নদীর ইতিহাস ঐতিহ্য আমাদের জানা খুবই প্রয়োজন। তৃণমূলের কাছ থেকে পাওয়া ধারণা ও পরামর্শ কাজে লাগিয়ে নদীকে বাঁচাতে হবে। ভালবাসা বাড়াতে হবে নদীর প্রতি। তাহলেই নদী বাাঁচবে’।
উল্লেখ্য বুধবার কুয়াকাটায় সম্মেলনের প্রথম দিনে বিশেষজ্ঞরা বলেন, নদী ও পানির অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশে এখনও জনঅংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়নি। আঞ্চলিকভাবে পানি অধিকার বঞ্চিত বাংলাদেশ। বলা হয় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পানির রাজনীতিতে পিছিয়ে বাংলাদেশ। এই পরিস্থিতির উন্নতিতে নদীকে থাকতে দিতে হবে নদীর মতো। পানিকে তার প্রাকৃতিক সত্ত্বায় চলতে দিতে হবে। আর এটি করতে হলে দরকার জনঅংশগ্রহণমূলক পানি ও নদী ব্যবস্থাপনা। তাই জলের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাতেই নদী ও পানির ভবিষ্যত বলে মনে করছেন তারা।