বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার অন্তর্গত ২০নং ওয়ার্ড যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ২০১৭ উপলক্ষ্যে আজ ২২ জানুয়ারী, রোজ রবিার সকাল ১০.০০ টায় কাজী বশির মিলনায়তন (মহানগর নাট্যমঞ্চে) অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি আশা প্রকাশ করে বলেন- আগামী জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রপতি নিরোপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। তিনি বলেন-রাষ্ট্রপতি আওয়ামী লীগের লোকও বানাবেন না, বিএনপির লোকও বানাবেন না, তিনি নিরোপেক্ষ লোক দিয়ে ইসি গঠন করবেন। অবিভাবক হিসেবে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে এটাই প্রত্যাশা করি। তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রীর সরকারের ইচ্ছার ইসি গ্রহণযোগ্য নয়। আমি আপন্রা সাথে একমত। সরকারেরও কোন ইচ্ছা নেই। শেখ হাসিনারও কোন ইচ্ছা নেই। শেখ হাসিনার ইচ্ছার মধ্যে যে প্রস্তাবলী থাকে সেখানে দলীয় লোকের নাম থাকে না। তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন রাষ্ট্রের অবিভাবক। তিনি যেই নাম দেবেন সেই নামে বিএনপির মত আওয়ামী লীগেরও কোন সমার্থকের নাম থাকবে না এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি। বিএনপি যা করেছে আওয়ামী লীগ তা করবে না। বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি নতুন নতুন আবদার নিয়ে এসেছে। মামা বাড়ির আবদার! বেগম খালেদা জিয়া বলেছে সরকারের অধীনে ইলেকশন কমিশন গ্রহণযোগ্য হবে না। তিনি বলেন, আপনার সাথে আমি দ্বিমত করছি না। সবিনয়ে বলছি আপনি যে ইসি করেছিলেন আজিজ মার্কা ইসি। সেই ইসি আজিজ মার্কা ইসির এম এ আজিজ সাহেব তিনি কি বিএনপি দলের লোক ছিলেন না? আপনি যাকে প্রধান উপদেষ্টা করতে চেয়েছিলেন সেই কে এম হাসান বিচারপতি আজকে সাব কমিটিতে যার নাম প্রস্তাব করেছেন সেই হাসান সাহেব কি বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন না? তাহলে কোনটা পক্ষ, কোনটা নিরোপেক্ষ? তিনি আরো বলেন, আজিজ সাহেব কি নিরোপেক্ষ? কে এম হাসান সাহেবরা কি নিরোপেক্ষ? কি বলতে চান? ওনারা কি নিরোপেক্ষ ছিলেন? উনি(খালেদা জিয়া) এখন যাদের নাম প্রস্তাব করছেন তারা বিএনপির সাপোর্টার বা নেতা হলে তারা কি পক্ষ না নিরোপেক্ষ? যুবলীগের প্রশংসা করে তিনি বলেন, যে শৃঙ্খলাটা আজকে যুবলীগে আছে সে শৃঙ্খলাটা আওয়ামী লীগে থাকা উচিত। আওয়ামী লীগে এখনো আমি যা পারি নি, যুবলীগ তা পেরেছে। তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের যে কোন গ্রামে যে কোন ওয়ার্ডের সম্মেলনে সুযোগ পেলেই সেখানে যাবো। কারণ ওয়ার্ড শাখাই হচ্ছে সঠিক ও সত্যিকারের পার্টির তৃণমূল। এই তৃণমূল থেকেই পার্টিকে গড়ে তুলতে হবে। বড় নেতা হলে ছোট জায়গায় যাবো না, এই ম্নাষিকতা থাকলে দলে নেতা বাড়বে, কর্মী বাড়বে না। কর্মী কমে যাবে। এ রকম করলে আওয়ামী লীগ বাচবে না। বাংলাদেশকে বাচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাচাতে হবে। দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সারা বাংলাদেশে যারা অপকর্ম করছে আমি তাদের বলছি সংশোধন হয়ে যান। শেখ হাসিনার এত অর্জন, এত উন্নয়ন কারো খারাপ আচারণের কারনে ম্লান হতে দিতে পারি না। তিনি আরো বলেন, আমি আমার কাজ শুরু করেছি। আমার প্রথম কাজ ‘আই হ্যাব টু সেট মাই ওউন হোম ইন ওয়ার্ডার’, আমার নিজের ঘর আগে গোছাতে হবে। সাজিয়ে নিতে হবে। তাই এখানে কোন অপকর্ম পার্টির নামে সহ্য করা হবে না। আমার ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছি। আমি ৪/৫ জন সংসদ সদস্যকে ডেকে পার্টি অফিসে সতর্ক করেছি। তিনি আরো বলেন, গতকাল হঠাৎ ঢাকা কলেজে একটা অপকর্ম হয়েছে। যেটা পার্টির ভাব মূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। সঙ্গে সঙ্গে একশন শুরু হয়ে গিয়েছে। অপকর্মকারীদের গত কালই বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমাদেরকে রোধ করতে হবে। আগামী নির্বাচনের জন্য এখন থেকে কাজ করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, একটা কথা মনে রাখবেন সরকারের আর এক বছর দশ মাস সময় রয়েছে। এর সময় আমাদের অস্তিত্বের, ভোটের জন্য উন্নয়নের কিছু বাকি নেই। বাংলাদেশ উন্নয়ন অর্জনে বিশ্বের বিষ্ময়। আমরা ভালোটা আশা করবো, মন্দের জন্য প্রস্তুত থাকবো। আমারা আগামী নির্বাচনে জিতেই গেছি এই আতœসন্তোষ আমাদের ডোবাবে। ভালোর জন্য আশা করতে হবে আর খারাপের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। অতীত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ কয় জন নেতা কর্মী বাড়ি ঘরে থাকতে পেরেছিল। কি ভয়ঙ্কর! আর একবার যদি আমাদের ক্ষমতা হারাতে হয়, যারা আসবে ২০০১, ২০০৬ এর চেয়েও ভয়ঙ্কর মূর্তি নিয়ে তারা আবির্ভূত হবে, ভয়াল মূর্তি নিয়ে তারা অবতীর্ণ হবে। তখন প্রাণে বাচতে পারবেন না। তাই ভালোর জন্য আশা করতে বলবো, খারাপের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলবো। খুব ভালো উন্নয়ন শেখ হাসিনা করবেন, আপনারা শুধু ভালো আচারণ করবেন।

যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন- বিএনপি হচ্ছে এখন নাইট পার্টি। রাত হলেই বেগম খালেদা জিয়া অফিস খোলে। বেগম খালেদা জিয়া বিশ্ব ইজতেমার মোনাজাত ধরতে পারেন না। কারণ সারা রাত অফিস করেন আর দিনের বেলা ঘুমান। অন্যদিকে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার যোগ্য এবং বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সম্মুখে এগিয়ে চলেছে। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার গৃহীত পদক্ষেপে বিশ্ব-দরবারে বাংলাদেশ আরো প্রশংসিত হবে। তিনি বলেন, সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ ও মৌলবাদ দমনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশে^ এক অনন্য উদাহরন সৃষ্টি করেছেন। প্রতিনিয়ত তিনি বাংলাদেশের সমাজ থেকে সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ ও মৌলবাদ দমন করে আগামী প্রজন্মের জন্য বসবাসযোগ্য একটি পৃথিবী গড়ার সংগ্রামে লীপ্ত রয়েছেন।

যুবলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, যুবলীগে যে সব কর্মীরা নিয়মিত কাজ করছে আগামীতে তাদের পুরুস্কৃত করা হবে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করতে হলে যুবলগীকে সর্বদায় সর্তক থাকতে হবে। তিনি বলেন, আজকে সারাদেশে ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলের মাধ্যমে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী যুবলীগকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। প্রবীণ এবং নবীণদের সমন্বয়ে সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করা হচ্ছে।

২০নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শেখ সাইদুর রহমান বাবু’র সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এ.কে. আজাদ এর পরিচালনায় সম্মেলন উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, প্রধান বক্তা ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ হারুনুর রশীদ, যুগ্ম-সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য আসাদুল হক আসাদ, কাজী আনিছুর রহমান, মিজানুল ইসলাম মিজু, শ্যামল কুমার রায়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহ-সভাপতি মাইনউদ্দিন রানা, সোহরাব হোসেন স্বপন, সারোয়ার হোসেন মনা, আনোয়ার ইকবাল সান্টু, হারুন-অর-রশিদ, নাজমুল হোসেন টুটুল, কামাল উদ্দিন খান, সৈয়দ আহমেদ, এনামুল হক আরমান, মোরসালিন আহমেদ, খোরশেদ আলম মাসুদ, যুগ্ম-সম্পাদক জাফর আহমেদ রানা, মোঃ ওমর ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বকুল, গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু, মাকসুদুর রহমান, কাজী ইব্রাহিম খলিল মারুফ, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য মোঃ আরমান হক বাবু, এমদাদুল হক এমদাদ, খন্দকার আরিফ-উজ-জামান আরিফ প্রমুখ।