প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী উড়োজাহাজে ত্র“টির ঘটনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুই কর্মীকে আরও পাঁচ দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত। ঢাকার মহানগর হাকিম নুরুন্নাহার ইয়াসমিন বুধবার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।বিমানের প্রকৌশল কর্মকর্তা নাজমুল হক ও কনিষ্ঠ টেকনিশিয়ান শাহ আলমকে এর আগে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সেই রিমান্ড শেষে বুধবার তাদের আদালতে হাজির করে আরও ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম পুলিশের পরিদর্শক মাহবুবুল আলম।
রিমান্ড আবেদনে তিনি বলেন, আসামিরা নিজেদের মধ্যে যোগসাজশে বিমানে ইচ্ছাকৃতভাবে যান্ত্রিক ত্রুটি ঘটায়। এতে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষতি করার উদ্দেশ্য ছিল বলে প্রতীয়মান হয়। তারা রিমান্ডে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এবং আসামিদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আবারও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।নাজমুল হকের পক্ষে তার আইনজীবী এ এইচ এস রাশেদ এর বিরোধিতা করে জামিনের আবেদন করেন।তিনি বলেন, রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেও নাজমুল হকের কাছ থেকে কিছু পাওয়া যায়নি। তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।
অপর আসামি শাহ আলমের পক্ষে কোনো আইনজীবী শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন না।দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করে দুইজনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন বলে প্রসিকিউশন পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মিরাশ উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।এ মামলার আরও নয় কর্মকর্তাকে দুই দফায় ১৫ দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে রাখা হয়েছে।এরা হলেন- বিমানের চিফ ইঞ্জিনিয়ার (প্রোডাকশন) দেবেশ চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ার (পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ) এস এ সিদ্দিক, ভারপ্রাপ্ত মুখ্য প্রকৌশলী (এনসিসি) বিল্লাল হোসেন, প্রকৌশল কর্মকর্তা লুৎফর রহমান, সামিউল হক, মিলন চন্দ্র বিশ্বাস ও জাকির হোসাইন, প্রকৌশল কর্মকর্তা মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান ও টেকনিশিয়ান সিদ্দিকুর রহমান।গত ২৭ নভেম্বর হাঙ্গেরি যাওয়ার পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানের একটি বোয়িং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তুর্কমেনিস্তানের আশখাবাত বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়। ইঞ্জিন অয়েলের ট্যাংকের একটি নাট ঢিলে থাকায় ওই বিপত্তি ঘটে।এর পেছনে নাশকতা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে তিনটি তদন্ত কমিটি হয়। তদন্তের ভিত্তিতে বিমানের নয় কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে বিমানের পরিচালক এম এম আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে এই মামলা করেন।