নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় প্রধান আসামি নূর হোসেন, র‌্যাব কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদসহ মৃত্যু দন্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামি গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি রয়েছেন। সোমবার তাদের মৃত্যুদন্ডের রায় হওয়ার পর মঙ্গলবার দুপুরে একজনের ভাই দেখা করেন কাশিমপুর কারাগারে। সোমবার নারায়নগঞ্জ আদালত কর্তৃক মৃত্যুদন্ডের রায় নিয়ে কাশিমপুর কারাগারে ফিরে আসার পর সাদা-কালো ডোরা কাটা পোশাক পরানো হলে তাদের সকলকেই কম-বেশি চিন্তিত থাকতে দেখা গেছে বলে কারাসূত্র জানায়।

কাশিমপুর কারাগারে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত অন্য বন্দিরা হলেন- র‌্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক বরখাস্ত লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, র‌্যাবের ক্যাম্প কমান্ডার বরখাস্ত মেজর আরিফ হোসেন, র‌্যাবের ক্যাম্প কমান্ডার বরখাস্ত লে. কমান্ডার মাসুদ রানা ও ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন। এর আগে সকাল ৭টার দিকে দুটি প্রিজন ভ্যানে কড়া প্রহরায় তাদের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এবং কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়।

আলোচিত সাত খুনের মামলায় সোমবার সকাল ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন ওই পাঁচজনসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদন্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ডের রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় ওই পাঁচজনসহ ২৩ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ মামলার ১২ আসামি পলাতক।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এর জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা বলেন, কাশিমপুর থেকে সোমবার সকাল ৭টার দিকে কড়া প্রহরায় নারায়নগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়। পরে সকাল ১০টার দিকে নারায়গঞ্জ আদালতে মৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষণার পর আদালত থেকে বিকেল সোয়া ৫টার দিকে আসামি র‌্যাবের ক্যাম্প কমান্ডার বরখাস্ত মেজর আরিফ হোসেন এবং র‌্যাবের ক্যাম্প কমান্ডার বরখাস্ত লে. কমান্ডার মাসুদ রানাকে এ কারাগারে আনা হয়। এরপর তাদের কয়েদীর পোশাক পরিয়ে সেলে পাঠানো হয়। ফাঁসির সেলে যাওয়ার পর তাদের খাওয়া-দাওয়া সব ঠিক থাকলেও তাদের বেশ আপসেট দেখা গেছে। রায় ঘোষণার পর মঙ্গলবার দুপুরে মাসুদ রানার এক ভাই দেখা করতে কারাগারে গেলেও অন্য কারো স্বজনরার মঙ্গলবারে আসেনি।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক জানান, তার কারাগার থেকেও ওই মামলার তিন আসামি র‌্যাব-১১এর সাবেক অধিনায়ক বরখাস্ত লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সিদ্দিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেনকে একই সময়ে আনা হয়। রাতেই তাদেরও পোশাক পরিয়ে ফাঁসির কনডেম সেলে পাঠানো হয়েছে। এসময় তাদের খুব চিন্তাযুক্ত দেখা গেছে। তার কারাগারের বন্দি নূর হোসেন, সাঈদ মোহাম্মদ এবং বেলাল হোসেনের স্বজনদের কেউ কারাগারে তাদের সাথে দেখা করতে আসেনি।

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর।