অপরাধী যত বড় হোক না কেন, সে দায়মুক্তি পাবে না। চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলার প্রভাবশালী আসামি র্যাবের কতিপয় কর্মকর্তা রোমহর্ষক হত্যাকান্ড ঘটিয়েছেন, যা সমগ্র জাতিকে স্তম্ভিত করেছে। সুপ্রিম কোর্টের সময়োপযোগী হস্তক্ষেপের ফলে অপরাধীদের দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা হয়। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে ওই মামলার বিচার নিষ্পত্তি করায় বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা আরও বেড়েছে। দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এসব কথা বলেছেন।প্রধান বিচারপতির বাণীতে বলা হয়, রাষ্ট্রের প্রত্যেক বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য স্বতন্ত্র চাকরির বিধান রয়েছে।
অধস্তন আদালতের বিচারকদের কাজের প্রতীকী ধরন অন্যদের চেয়ে স্বতন্ত্র অভিহিত করে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারকদের শৃঙ্খলার বিষয়ে নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপের সুযোগ থাকলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের পক্ষে স্বাধীনভাবে বিচারকাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে বিঘœ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সংগত কারণে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা প্রণয়ন আবশ্যক বলে এর খসড়া প্রণীত হয়েছে। অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণসংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট প্রকাশের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে সামান্য বিষয়ে দ্বিমত থাকলেও তা অচিরেই দূর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি।প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারকদের স্বতন্ত্র আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধিমালা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হলে বিচার বিভাগ পৃথক্করণের উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হবে।
এদিকে, সুপ্রিম কোর্ট পরিচালনার সুবিধা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিস স্পেস বাড়াতে ২০তলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হবে। ভবনের ওপরে থাকবে একটি হেলিপ্যাডও।৩৩০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয় করে প্রস্তাবিত ২০তলা ভবন নির্মাণ করবে গণপূর্ত অধিদফতর। ২০১০ সালের মার্চ থেকে ২০২০ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে গণপূর্ত অধিদফতর।গণপূর্ত অধিদফতর সূত্র জানায়, বিচার বিভাগ বর্তমান অবকাঠামো এবং স্পেস নিয়ে যথাযথভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। সে লক্ষ্যেই ২০তলা প্রশাসনিক ভবনটি নির্মাণ করা হবে।গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত-সচিব (উন্নয়ন-১) এস এম আরিফ-উর-রহমান বলেন, গণপূর্ত অধিদফতর আমাদের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। এটি এখন প্রাথমিক পর্যায়ে আছে।গণপূর্ত অধিদফতর সূত্র জানায়, ০ দশমিক ৯৫ একর জমিতে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৭৫৩ দশমিক ৩১ বর্গফুটের অফিস স্পেস নির্মাণ করা হবে। ২০তলা ভবনে ৪০০ আসনের একটি কনফারেন্স রুম, দু’টি ক্যাফেটেরিয়া, একটি সুইমিং পুল থাকবে। পাশাপাশি থাকবে লিগ্যাল এইড অফিস, মেডিকেল সেন্টার, ডে কেয়ার সেন্টার, লাইব্রেরি, জিমনেশিয়ামও। বিদ্যুতায়নের পাশাপাশি পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ২ লাখ গ্যালন ভূ-গর্ভস্থ জলাধারও থাকবে ভবনে।
১ হাজার ২০০ মিটারের একটি রানিং কম্পাউন্ড ও ৩ হাজার বর্গমিটারের কংক্রিটের সড়ক থাকছে প্রকল্পের আওতায়। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলাচলের জন্য একটি জিপ, একটি কার, একটি মাইক্রোবাস ও একটি মোটরসাইকেলও কেনা হবে।গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার বলেন, ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের জায়গা ঠিক করে দেবেন।