অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বিচারকাজে সম্পৃক্তরা দেশ ও জাতির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।তিনি বলেন, তবে এ কাজের সাথে সম্পৃক্ত সবাইকে সততা, নিষ্ঠা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে।তিনি আরো বলেন, মনে রাখতে হবে তাদের একটু ভুলের কারণে অন্যের অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে।

মঙ্গলবার সকালে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির বার হল-৫ এর নতুন ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এ ভবন নির্মাণ করা হয়।
সিলেটের আইনজীবী সমিতি শত বছরের পুরনো একটি প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এখানে অনেক গুণী ব্যক্তি কাজ করেছেন। বর্তমানে কর্মরত আইনজীবীরাও তাদের মতোই সমিতির সুনাম অক্ষুণœ রেখে এগিয়ে যাবেন।তিনি বলেন, ব্রিটিশ শাসনামলে সিলেটকে আসামের সাথে যুক্ত করা হয়। তবে শর্ত ছিল এখানকার শিক্ষা ব্যবস্থায় কলকাতার প্রাধান্য থাকবে। আর বিচার ব্যবস্থা চলবে বাংলার আইনে। অর্থাৎ আসামের কোর্ট এখানে একদিনের জন্যও বসেনি।

সিলেট আদালত নিয়ে নিজের শৈশব ও কৈশোরের স্মৃতিকথা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, স্কুল জীবনে প্রায় সময় আইনজীবী সমিতির বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও অনুষ্ঠানে যোগ অংশ নিতাম। সে সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ওইসব প্রতিযোগিতা নিয়ে অন্যরকম উচছ¡াস বিরাজ করত।মানসিক সুস্থ্যতা ও রুচির বিকাশে এসবের খুবই দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমিতির নেতৃবৃন্দকে আগের সেই কার্যক্রম পুনরুদ্ধার অথবা চলমান রাখা উচিত।সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি একেএম শমিউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট জেলা ও দায়রা জজ মনির আহমেদ পাটোয়ারী, সিলেট মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একেএম আবদুল মুমেন ও সিলেট গণপূর্তর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানের শুরুতে অর্থমন্ত্রী ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্মিত ৫ তলা বিশিষ্ট ৫নং বার হল ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।গণপূর্ত বিভাগের তত্বাবধানে ৪ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয় ধরে নির্মিত এ ভবনের প্রতি তলায় রয়েছে বার হল, এডভোকেট চেম্বার, লিফট, বাথরুম, ইউরিনাল ও টয়লেট। ভবনের সর্বমোট পরিসর ২১ হাজার ৮৮৩ দশমিক ৭২ বর্গফুট।দীর্ঘ প্রতীক্ষিত নতুন ভবনের উদ্বোধন করায় আদালতের আইনজীবীদের মাঝে আনন্দ-উচছ¡াস বিরাজ করছে। ভবনটি নির্মাণের ফলে ৫নং বারের আইনজীবীদের পেশাগত কার্যক্রমের সমস্যা যেমন কমবে, তেমন বিচার প্রার্থী লোকজনও এর সুফল ভোগ করবেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।অনুষ্ঠানে সিলেটের আরো ৯টি উন্নয়ন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ ‘উদ্দিপন’, শাহী ঈদগাহের মিনার কমপ্লেক্স, সিটি করপোরেশনের নির্মিত ৪টি সড়ক, সংস্কৃত কলেজের নতুন ভবন, পিডিবি-১ এর ভবন, লাক্কাতুড়া হাইস্কুল, বাদাঘাট পল্লী বিদ্যুৎ সাবস্টেশন, জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের ভবন, রাখালগুল প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জৈনকারকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন।