সংশোধিত না হলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে অপকর্ম সংগঠনকারী নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও বিএনপির কাজ হচ্ছে ষড়যন্ত্র করাÑএ অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ভোটে জিততে পারবে না বলে বিএনপি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়।
শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের যৌথ সভা শেষে সাংবাদিকদের সামনে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।১০ জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করবে আওয়ামী লীগ। কর্মসূচী সফল করতে শুক্রবার সকালে দলের ধানমন্ডি কার্যালয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন কেন্দ্রীয় নেতারা।আশঙ্কা প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের আর বলেন, জনপ্রিয়তার জন্য জীবন ঝুঁকিতে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।দলের নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভাঙলে বহিস্কার করা হবে।জনসভার সময় রাজধানীর সড়কগুলোতে জনদুর্ভোগ সহনীয় পর্যায়ে রাখতে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সকলকে দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তার কারণে তার জীবন ঝুঁকির মধ্যে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি বলেন, বিএনপি-জামাতের চক্রান্ত থেমে নেই।আত্মতুষ্টিতে না ভোগে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক ও সজাগ থাকার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।কাদের বলেন, যারা অপকর্ম করে তাদের সংশোধন হতে হবে। যারা সংশোধন হবে না তাদের দল থেকে বের করে দিতে হবে। প্রথমে সংশোধন করবো; যারা সংশোধন হবে না তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
দেশে সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদী গোষ্ঠীর বিপদ এখনো কাটেনি মন্তব্য করে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন ওবায়দুল কাদের।আশকোনার জঙ্গি আস্তানায় সাহসী অভিযান সফলভাবে শেষ হয়েছে মন্তব্য করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, এ রকম আরও কত আশকোনা আছে এটা এই মুহূর্তে বলা যায় না। কারণ, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ এখন একটা গ্লোবাল ফেনোমেনন।তারা কখন কোথায় হানা দেবে, তাদের ডালপালা আজকে বিস্তারিত হয়ে আছে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, সাবধান থাকতে হবে। আত্মসন্তুষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নেই।বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনাকে শেখ হাসিনাকে হত্যার ২০তম চেষ্টা’ হিসেবে বর্ণনা করে কাদের বলেন, একটা মহল বঙ্গবন্ধুর মতো শেখ হাসিনাকেও সরিয়ে দিতে চেষ্টা করছে।আমাদের যারা প্রতিপক্ষ, তারা এতদিনে বুঝতে পেরেছে নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে পরাজিত করা, হারিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। বঙ্গবন্ধুকে কেন হত্যা করা হয়েছে? ওরা বুঝতে পেরেছিল ভোটে তাকে হারানো যাবে না; পরে ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়েছে।আজকে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার যে জনপ্রিয়তা, দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে যতই তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন, ততই তার শত্র“ বাড়ছে; জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। শেখ হাসিনাকে উন্নয়নের রোল মডেল অ্যাখ্যা দিয়ে ‘পার্টির চেয়েও তার উচ্চতা অনেক বেশি’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
৫ জানুয়ারিকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে পালন করায় বিএনপির সমালোচনা করে কাদের বলেন, মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও বিএনপির কাজ হচ্ছে ষড়যন্ত্র করা। গণতন্ত্র তারা চায় না, তারা চায় ষড়যন্ত্র। তারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়। আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওছারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ নাথ এমপি।সভায় আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ উপস্থিত ছিলেন।