প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নরওয়ের সঙ্গে বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে এসডিজি বাস্তবায়নে দু’দেশের এক সঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।বুধবার নওয়ের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর তেজগাঁও কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে শেখ হাসিনা একথা বলেন।প্রধানমন্ত্রী নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠক শেষে একথা বলেন।

করিম বলেন, বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাণিজ্য ও জ¦ালানিসহ বিভিন্ন খাতে দু’দেশের মধ্যকার সহযোগিতা জোরদারের পন্থা নিয়ে আলোচনা হয়।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশেস অর্থনৈতিক অঞ্চলে নরওয়ের বিনিয়োগকে স্বাগত জানাবে। নরওয়ে মৎস্য, ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, জাহাজ নির্মাণ খাতেও বিনিয়োগ করতে পারে। এছাড়া জ¦ালানি খাত ও সমুদ্র ভূতাত্ত্বিক জরিপে সহযোগিতাকেও স্বাগত জানাবে বাংলাদেশ।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বনায়ন, উপকূলীয় অঞ্চলে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা ও অন্যান্য কার্বন নিস্ক্রিয়করণ প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, তাঁর দেশ নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি শুরু করেছে এবং সব উন্নয়ন কর্মকান্ডে পরিবেশ ইস্যুকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।নরওয়ের রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দৃষ্টিতে বাংলাদেশ খুবই আকর্ষণীয় একটি দেশ। তিনি দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতা সম্প্রসারণে গুরুত্বারোপ করেন।মিজ ব্লেকেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করে বলেন, এটি বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য সুলক্ষণ।তিনি বলেন, ২০১২ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে নরওয়েতে বাংলাদেশের রফতানি ৬০ শতাংশ বেড়েছে।রাষ্ট্রদূত এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশের প্রশংসা করে বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে দেশটি উৎসাহব্যঞ্জক সাফল্যের স্বাক্ষর রাখবে।নরওয়ে বাংলাদেশের জ¦ালানি খাতে কাজ করতে আগ্রহী একথা উল্লেখ করে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে এক সঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের জুলাইয়ে গুলশানে হোটেল আর্টিজান বেকারিতে এবং কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদ জামায়াতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ৪ পুলিশ সদস্যের পরিবারের কাছে বুধবার আর্থিক অনুদান প্রদান করেছেন।গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সিনিয়র সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট রবিউল করিম এবং বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালাউদ্দিন খান চলতি বছরে ১ জুলাই হোটেল আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছেন। ৭ জুলাই শোলাকিয়া ঈদ জামাতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন কনস্টেবল জহুরুল হক ও কনস্টেবল আনসারুল হক।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বুধবার এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে নিহত পুলিশ সদস্যের পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকার ৯টি চেক হস্তান্তর করেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম একথা জানান।রবিউল করিমের মা করিমন নেছা, পিতা সাজেদুল ইসলাম, স্ত্রী উম্মে সালমা, সালাউদ্দিন খানের স্ত্রী বেগম রিম করিম, কন্যা সামাস্থা, পুত্র সেম রাইয়ান, কনস্টেবল আনসারুল হকের মা রাবেয়া আক্তার, স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম এবং কনস্টেবল জহিরুল হকের মা জুবাইদা খাতুন চেক গ্রহণ করেন।চেক গ্রহণকালে নিহত পুলিশ পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। প্রধানমন্ত্রী তাদের সান্তনা দেন এবং ভবিষ্যতেও তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।