‘সব মানুষ তার নিজ-নিজ অধিকার নিয়ে বাঁচবে। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের স্বার্থে কারো সাথে আপোষ করতে রাজি নই।’ গতকাল রোববার দুপুর ১২টায় ঐতিহাসিক তানোর দিবসে রাজশাহীর তানোর গোল্লাপাড়া বাজারে গোডাউনের পাশে অবস্থিত বিল্পবী নিহত ৪৪ নেতাকর্মীর বেদীতে শোক র্যালি নিয়ে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশের সংবিধান মতে রাষ্ট্রের কর্ণধর সাধারণ জনগণ কিন্তু বর্তমানে জনগন রাষ্ট্রের সকল অধিকার সমানভাবে ভোগ করতে পারছেনা। তাই সমাজের শোষিত-নিপিড়িত মানুষের অধিকার আদায়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ন্যায়ের পক্ষে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
১৯৭৩ সালে তানোরের প্রগতিশীল কৃষক আন্দোলনের সম্মূখ ভূমিকা পালন করায় নেতাকর্মীদেরকে তৎকালীন সরকারের রক্ষীবাহিনীর নির্মম নির্যাতনে হত্যা করে তাদের এ স্থানে গণকবর দেয়া হয়। যা ইতিহাসের কালো অধ্যায় ও অধিকার আদায়ের লড়ায়ে অনূপ্রেরণার স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এসময় ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজশাহী মহানগর সভাপতি লিয়াকত আলী লিকুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামানিক বেদুর উপস্থাপনায় এতে উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক সোনালী সংবাদ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ও নাগরিক ঐক্য এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা কমিটির আহবায়ক মাহমুদ জামাল কাদেরী, ওয়ার্কার্স পাির্টর জেলা সভাপতি রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য এন্তাজুল হক বাবু, জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য এ্যাডভোকেট আবু সাইদ, আব্দুল মতিন, বাংলাদেশ সাম্যবাদি দলের(এম এল) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড ফেরদৌস কামাল মাসুম, মুরাদ হোসেন, ডালিম, উপজেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদক ইউনুস আলী, জেলা যুবমৈত্রির সভাপতি মনির উদ্দিন পান্না, সহসাধারণ সম্পাদক দারেজ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হানুল হক, সাবেক পাঁচন্দর ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দীন, রাজশাহী মহানগর যুবমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক, তানোর পৌর ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি আব্দুল জলিল, উপজেলা যুবমৈত্রীর সভাপতি আবু বাক্কার সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক শিমুল প্রমুখ।
বক্তব্য শেষে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সেই সঙ্গে প্রধান অতিথি উপস্থিত নেতাকর্মীদের অধিকার আদায়ের লক্ষে এক সাথে মুষ্ঠিবদ্ধভাবে হাত তুলে ঐক্য বন্ধনের শপথ বাক্য পাঠ করান।
উল্লেখ্য, দেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭৩ সালে তানোরের প্রগতিশীল কৃষক আন্দোলনের(বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল এমএল) বিল্পবী নেতা এরাদ আলী, এমদাদুল হক মন্টু মাস্টার, হজরত আলী, মহির উদ্দিন, আবদুল মজিদ, খোকা মন্ডল, মনিরুজ্জামান, কমরেড আবদুল জব্বার মাস্টার, কমরেড ওয়েজ কামালসহ ৪৪ নেতাকর্মীদের নির্মমভাবে নির্যাতন করে রাতের আঁধারে তৎকালীন সরকারের রক্ষীবাহিনী ১১ ডিসেম্বর রাজশাহীর তানোর থানার গোল্লাপাড়া বাজারে অবস্থিত গোডাউনের পাশে গণকবর দেয়।
মিজানুর রহমান, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি