নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, বিশ^মানের একটি আধুনিক বন্দর নির্মাণের ক্ষেত্রে আরো একধাপ এগিয়ে গেল পায়রা বন্দর।তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে চীনা দু’টি কোম্পানী এগিয়ে এসেছে। আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে পায়রা হবে বিশ্বের অন্যতম একটি আধুনিক বন্দর। বৃহস্পতিবার নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চীনের দু’টি কোম্পানির সাথে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর (এমওইউ) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।নৌ-পরিবহন মন্ত্রীর উপস্থিতিতে এমওইউ’তে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) কমডোর মোঃ সাইদুর রহমান এবং চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোং লিঃ (সিএইচইসি) এর পক্ষে যুগ্ম ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএল জেং নানহাই ও চায়না স্টেট কনষ্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন লিঃ (সিএসসিইসি) এর পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক লি শুজিয়াং স্বাক্ষর করেন।এ সময় নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধব রায় উপস্থিত ছিলেন।মন্ত্রী বলেন, বন্দরের উন্নয়ন কাজকে তরান্বিত করতে বন্দরের মূল অবকাঠামো নির্মাণ, তীর রক্ষাবাঁধ ও আবাসন এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের স্থাপনা নির্মাণে চীন এগিয়ে এসেছে।

তিনি বলেন, বন্দরের মূল অবকাঠামোর মধ্যে অন্তর্র্ভূক্ত রয়েছে সংযোগ ব্রিজ, রাস্তা, বন্দরের জন্য অত্যাবশ্যক অবকাঠামোসহ পয়ঃনিষ্কাশন, জলনিষ্কাশন আন্তঃসড়ক সংযোগ, রেল যোগাযোগ ইত্যাদি। সিএইচইসি বন্দরের মূল অবকাঠামো নির্মাণের কাজটি করবে।নৌ-মন্ত্রী বলেন, নদীর তীর রক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে বন্যা প্রতিরোধ, ভূমি ক্ষয়রোধ ইত্যাদি প্রতিরোধ করা সুদৃঢ় হবে। তীর রক্ষাবাঁধ ও আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যখাতের স্থাপনা নির্মাণ করবে সিএসসিইসি। এ তিনটি উন্নয়ন কম্পোনেন্ট জিটজি’র আওতায় বাস্তবায়িত হবে।তিনি বলেন, আজকের সমঝোতা স্মারকপত্রসমূহ স্বাক্ষরের মাধ্যমে পায়রাবন্দর কর্তৃপক্ষ আধুনিক বন্দর নির্মাণের যাত্রার ক্ষেত্রে আরো একধাপ এগিয়ে গেল।পায়রা বন্দরে উন্নয়ন কাজকে ১৯টি কম্পোনেন্টে বিভক্ত করা হয়েছে। আলোচ্য তিনটি কম্পোনেন্টের কাজ জিটুজি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের জন্য কমিটি সুপারিশ দাখিল করে। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সিএইচইসি এবং সিএসসিইসি’র সাথে আলোচ্য তিনটি এমওইউ স্বাক্ষরের অনুমোদন দেয়। এ তিনটি কম্পোনেন্টকে পায়রা বন্দরের ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এইচআর ওয়ালিংফোর্ড পায়রা বন্দরের বিস্তারিত হাইড্রোলিক ও বাস্তবতা সংক্রান্ত সমীক্ষা প্রতিবেদনে নদী তীর রক্ষা, মূল বন্দর অবকাঠামো এবং জনকল্যাণ সংক্রান্ত কার্যক্রম, যেমন-গৃহায়ন, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা সুবিধাদি নির্মাণের সুপারিশ করেছে।

উপরোক্ত তিনটি কম্পোনেন্ট বাস্তবায়নের পর ২০১৯ সালকে টার্গেট ধরে পূর্ণাঙ্গ বন্দর উন্নয়নের জন্য অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে কন্টেইনার টার্মিনাল, বাল্ক টার্মিনাল, পেসেঞ্জার টার্মিনাল, টাগ বোট সংগ্রহ, বিদ্যুৎ প্ল্যান স্থাপন, নৌ সংরক্ষণ সুবিধা নির্মাণ ইত্যাদি কাজ হাতে নেয়া হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর দেশের ৩য় সমুদ্র বন্দর হিসেবে পায়রা সমুদ্রবন্দর উদ্বোধন করেন। পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় দেশের এ ৩য় সমুদ্রবন্দর ইতোমধ্যে সীমিত আকারে পণ্য খালাস কার্যক্রম শুরু করেছে। রাবনাবাদ চ্যানেলের পশ্চিম তীরে ৭ হাজার একরের অধিক ভূমি জুড়ে বন্দরটি নির্মিত হচ্ছে।