%e0%a6%9f%e0%a6%bf%e0%a6%86%e0%a6%87%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b0-%e0%a6%9f%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a6%bf-%e0%a6%ac%e0%a7%8b%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a1%e0%a7%87%e0%a6%b0

টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খা ছিল নারী-পুরুষের সমমর্যাদা অর্জন। কিন্তু দেশে নারী নির্যাতন খুব সহজ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাধীন দেশে নারী নির্যাতন হতে পারে না।সমমর্যাদায় যৌথ জীবন’ স্লোগানে নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মর্যাদাভিত্তিক পরিবার গড়ে তোলার আহ্বানে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি চত্বরে দিনব্যাপী আয়োজিত মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজক সংস্থা‘আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোটের’ চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার দিনব্যাপী শিশু একাডেমি চত্বরে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।অনুষ্ঠানে সুলতানা কামাল নারী নির্যাতনমুক্ত দেশ গড়ে তুলতে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ মেলার উদ্বোধন শেষে বলেন, ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’এ বোধ আমাদের অন্তরে লালন করতে হবে। তাহলে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে না।অনুষ্ঠানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের স্টলে দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, ২০১১ সাল থেকে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ছয় বছরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দুই হাজার ৯০টি মামলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে মাত্র ৭২৯ টির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। মোট মামলার প্রায় ৬৫ শতাংশের তদন্ত প্রতিবেদন এখনো অসম্পূর্ণ আছে। তবে এগুলো প্রস্তুতের কাজ চলছে বলে স্টল থেকে জানানো হয়।গত ছয় বছরে দাখিলকৃত নারী নির্যাতন মামলার ৬৫ শতাংশেরই চূড়ান্ত প্রতিবেদন এখনও তৈরি হয়নি।

ডিএমপির সংশ্লিষ্ট বিভাগটির স্টল থেকে জানা যায়, ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ছয় বছরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের আওতায় মোট মামলা হয়েছে ২ হাজার ৯০টি। এর মধ্যে ৭২৯টি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, বাকি ১ হাজার ৩৬১ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন এখনও সম্পন্ন হয়নি, যা মোট মামলার প্রায় ৬৫ শতাংশ। তবে এসব মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন যত দ্রুত সম্ভব প্রস্তুতের কাজ চলছে বলেও জানিয়েছে উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেসটিগেশন ডিভিশন সূত্র।

অনুষ্ঠানে ‘আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোটের’ চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মূল কথা ছিলো মানুষ যাতে সমমর্যাদা নিয়ে দেশ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু নারীদের জীবনে নির্যাতন যেন খুব সহজ একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাধীন একটা দেশে এটা হতে পারে না। আমরা সবাই একটা বিষয়ে একমত যে মানব নির্যাতন চলবে না। মানব নির্যাতন এদেশে কাম্য নয়। নারী নির্যাতনমুক্ত দেশ গড়ে তুলতে হবে।সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, আমাদের অন্তরে লালন করতে হবে, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। ধর্মীয় অনুশীলন থাকলে আমরা কোনো অন্যায় করবো না। আগে নিজেদের মধ্যে আন্তরিকতা তৈরি করতে হবে। নারীদের প্রতি যাতে অন্যায় অবহেলা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

এ সময় ডিএমপির উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেসটিগেশন ডিভিশনের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আমরা আমাদের ডিভিশনের মাধ্যমে নারী নির্যাতনের শিকার বা নারী ও শিশু সংশি।লষ্ট যে কোনো ভিকটিমকে সহায়তা করে থাকি। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত আমরা প্রায় ৪ হাজার ৯৯৯ জন ভিকটিমকে সহায়তা করেছি। সামনেও আরও সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি।দাম্পত্য সম্পর্ককে মর্যাদাপূর্ণ ও সুস্থ রাখতে কাজ করছে এমন ১৭টি সরকারি-বেসরকারি সেবাদানকারী সংস্থা ও ব্যক্তিগত দাতা সংস্থার অংশগ্রহণে এ মেলায় প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা হয়। এ ধরনে তথ্য পরে কোথায় পাওয়া যাবে, তাও জানানো হয়। মেলায় নারী-পুরুষের যৌন ও প্রজনন সেবা, সুস্থ গর্ভধারণ সেবা, পারিবারিক নির্যাতন রোধে করণীয় এবং আইনি অধিকার লাভের সুযোগ, মানসিক সুস্থতার জন্য কাউন্সেলিং সেবা লাভ, আয় বর্ধনমূলক কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ লাভ এবং ব্যাংকিং সেবা, সঞ্চয় ও বিনিয়োগ বিষয়ে বিভিন্ন স্টল সাজানো হয়। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক ফার্স্ট সেক্রেটারি অ্যানি ভেস্টজিন্স, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক আবুল হোসেন, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন) ফরিদা ইয়াসমিন, সরকারি দলের সাংসদ সফুরা বেগম রুমি, হাজেরা সুলতানা, কাজী রোজী প্রমুখ।