%e0%a6%ac%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%97%e0%a6%ad%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%87

নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে খালেদা জিয়ার প্রস্তাবের অনুলিপি রাষ্ট্রপতির বরাবর বঙ্গভবনে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি। মঙ্গলবার বঙ্গভবনে গিয়ে প্রস্তাবের একটি অনুলিপি দিয়ে আসে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল।রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চেয়ে দলটি ফের চিঠিও দিয়েছে। বেলা সোয়া ১১টার দিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান রুহুল আলম চৌধুরী ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বঙ্গভবনে যান।

সাড়ে ১১টার দিকে ফিরে এসে বঙ্গভবনের ফটকে রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপতি চিকিৎসার জন্য আজ সকালে সিঙ্গাপুর গেছেন। নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রস্তাবের অনুলিপি এবং সাক্ষাৎ চেয়ে চিঠি রাষ্ট্রপতির বরাবর দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতির সহকারী সামরিক সচিব তা গ্রহণ করেন। তারা রাষ্ট্রপতির সহকারী সামরিক সচিব বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. মাইনুর রহমানের সঙ্গে দেখা করেন। বিএনপির দুই নেতা ১৫ মিনিট বঙ্গভবনে ছিলেন।নির্বাচন কমিশন গঠন ও নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে সম্প্রতি ১৩ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেন খালেদা জিয়া। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ওই দিনই বিএনপির প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করে।

রাষ্ট্রপতির সহকারী প্রেস সচিব মাহমুদুল হাসান বলেন, বিএনপির প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতির সহাকারী সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইনুর রহমানের কাছে তাদের মহাসচিবের সই করা চিঠি এবং প্রস্তাবের মুদ্রিত কপি হস্তান্তর করেন।বিএনপি প্রতিনিধিদল যাওয়ার আগেই সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে বঙ্গবভবন ত্যাগ করেন।বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট হস্তান্তরের জন্য দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন গঠন ও শক্তিশালীকরণে দেশনেত্রীর উপস্থাপিত ১৩ দফা প্রস্তাবাবলীর মুদ্রিত কপি ও দলের মহাসচিব স্বাক্ষরিত একটি আবেদন তার সহকারী সামরিক সচিবের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। তিনি সেটা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করেছেন।তিনি জানিয়েছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি শারীরিক অসুস্থতার কারণে বিদেশে গিয়েছেন। তিনি ১১ ডিসেম্বর দেশে ফিরে আসবেন।এরপর ধারাবাহিকতাভাবে বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

রাষ্ট্রপতির সহকারী সামরিক সচিবের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় নির্ধারিতই ছিল বলে জানান রিজভী।কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদপূর্তি হচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। এরপর যে কমিশন দায়িত্ব নেবে, তাদের অধীনেই ২০১৯ সালে একাদশ জাতীয় নির্বাচন হবে। নতুন কমিশনই বাছাই কমিটির মাধ্যমে করা হবে- এমন আভাস আগেই দিয়েছেন আইনমন্ত্রী। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া কেমন হবে তার রূপরেখা তুলে ধরতে গত ১৮ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলনে আসেন দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।তিনি নির্বাচন কমিশন নিয়োগে বাছাই কমিটি গঠনের রূপরেখা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা এবং ‘সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ’ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ ১৩টি প্রস্তাব দেন।

এসব প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছাতে গত ২১ নভেম্বর খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার টেলিফোনে রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিবের সঙ্গে কথা বলেন। কোনো জবাব না পেয়ে ২৩ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চায় বিএনপি। এতেও সাড়া না পেয়ে প্রস্তাবসহ একটি চিঠি বঙ্গভবনে পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত নেয় দলটি।বিজয় দিবসের পরপরই রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে বর্তমান কমিশন ও নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসতে পারেন বলে এরই মধ্যে আভাস দিয়েছেন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন। প্রেস সচিব কোনো তারিখ না বললেও বঙ্গভবনের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ১৮ ডিসেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করার কথা ভাবা হচ্ছে। আর প্রথমদিনই বিএনপিকে ডাকা হতে পারে।রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা প্রত্যাশা করি, মহামান্য রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে এদেশের মানুষের যে আকাঙ্খা- নির্বাচন কমিশন কেমন হওয়া উচিৎ, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন কমিশন গঠনে কার্য্কর উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।