ঢাকায় স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) নির্ভর ট্যাক্সি পরিবহনসেবা উবারের সঙ্গে সরকারের যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত সমাধান অবশ্যই হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিআরটিএর সঙ্গে তাদের যে ঝামেলা তৈরি হয়েছিল, আমি এটা বন্ধ করেছি। এ ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করতে সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসুন।বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন,‘উবারকে নিরুৎসাহিত করা ঠিক হবে না। তাহলে আমাদের গণপরিবহনের সংকট হবে। আমরা বলছি ডিজিটাল বাংলাদেশ। আবার ডিজিটাল বাংলাদেশে নতুন প্রযুক্তি এলে যদি নিরুৎসাহিত করি, তাহলে এটা দ্বিচারিতা। এটা স্ববিরোধী। ইতিমধ্যে বিআরটিএ একদফা বৈঠক করেছে। এ ব্যাপারে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত সমাধান অবশ্যই হবে এবং আমি সেটা চাই।গত ২২ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইনভিত্তিক পরিবহন সেবাদাতা নেটওয়ার্ক উবার বাংলাদেশে তাদের সেবা চালু করে। এরই মধ্যে রাজধানী ঢাকায় স্মার্টফোন অ্যাপভিত্তিক এই ট্যাক্সিসেবাকে অবৈধ ঘোষণা করে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিআরটিএ। ২৫ নভেম্বর সংস্থাটি এ-সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি বিআরটিএর পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) মো. নুরুল ইসলামের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
উবার প্রসঙ্গে কাদের বলেন, এটা নতুন প্রযুক্তি, লেটেস্ট প্রযুক্তি, তবে একটা সিস্টেমের মধ্যে আনতে হবে। আমি বিআরটিএকে বলেছি এটাকে প্রত্যাখ্যান না করে কিভাবে একটা সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে এসে গণপরিবহন সঙ্কট দূর করা যায় তা দেখতে।ইতিমধ্যে বিআরটিএ একদফা বৈঠক করেছে। এ ব্যাপারে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত সমাধান হবে। আর আমি সেটাই চাই।
স্মার্টফোন অ্যাপভিত্তিক ট্যাক্সি সেবার নেটওয়ার্ক উবার কর্তৃপক্ষ গত ২২ নভেম্বর বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেয়।এই সেবার জন্য উবারের নিজস্ব কোনো ট্যাক্সি নেই। ব্যক্তিগত গাড়ি আছে এমন যে কেউ উবার অ্যাপ ডাউনলোড করে নিবন্ধনের মাধ্যমে এর চালক হয়ে যেতে পারেন। যাত্রীরাও একই অ্যাপ ব্যবহার করে সেবা নিতে পারেন।তবে তিনদিনের মাথায় গত শুক্রবার উবারের সেবাকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয় সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বিআরটিএ।এর প্রেক্ষিতে ২৯ নভেম্বর বিআরটিএ চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকে বসেন উবারের তিন প্রতিনিধি। বৈঠকে নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান উবারের সেবায় ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারে আপত্তির কথা জানিয়ে দেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, “এটা নিয়ে বিআরাটিএর যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল, আমি সেটা তা বন্ধ করে দিয়েছি। এটাকে একটা সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসতে বলেছি। এটা বন্ধ করে দেবেন না, তা হলে আমাদের গণপরিবহনে সঙ্কট দেখা দেবে।উবারের মতো যে কোনো নতুন উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিকে স্বাগত জানানো উচিত বলে মনে করেন তিনি।আমরা বলছি ডিজিটাল বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশে নতুন প্রযুক্তি এলে যদি নিরূৎসাহিত করি, তাহলে এটা দ্বিচারিতা, এটা স্ববিরোধী।
সচেতনতার অভাবে বাংলাদেশে গাড়ি চালকদের মতো পথচারীরাও বেপরোয়া বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের।দাবি করতে পারি আমরা দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন করতে পেরেছি, কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে পেরেছি এটা দাবি করতে পারি না। সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে হলে ইলিয়াস কাঞ্চনের মত নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে হবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনিস্টিটিউটের পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন।সভাপতিত্ব করেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের’ ভাইস চেয়ারম্যান রোটারিয়ান সৈয়দ এহসানুল হক কামাল।