abdul-hamid

জলবায়ু পরিবর্তনকে মানবজাতির জন্য ‘বিপজ্জনক হুমকি’ হিসেবে বর্ণনা করে এর মোকাবিলায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বিত প্রয়াসের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ।শুক্রবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘সাউথ এশিয়া জুডিশিয়াল কনফারেন্স অন এনভায়রনেমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট চেইঞ্জ’ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

সময় এসেছে কিয়োটো প্রটোকল ও প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নেরÑ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, মানবজাতির জন্য হুমকিÑ এ সমস্যা কোনো একক দেশের পক্ষে মোকাবেলা করা সম্ভব নয় জানিয়ে রাষ্ট্রপতি, এক্ষেত্রে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।তিনি আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন আজ বৈশ্বিক সমস্যা। কোনো একক দেশ বা অঞ্চলের পক্ষে এ সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় সকল দেশের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস জরুরি। সময় এসেছে এ সংক্রান্ত চুক্তিগুলো বাস্তবায়নের।

পরিবেশ সংরক্ষণ ও প্রতিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় দেশের বিচার বিভাগের ভূমিকার প্রশংসা করে আব্দুল হামিদ বলেন, সার্বিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার বিচার বিভাগের ভূমিকা এক্ষেত্রে প্রশংসনীয়।তিনি বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য দেশের বিচার বিভাগ খুবই সংবেদনশীল এবং সে অনুযায়ী তারা কাজ করছে। একইসঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বিচার বিভাগও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

তিনি বলেন,জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা কেবল দক্ষিণ এশিয়ার নয়, এটি সমগ্র মানবজাতির সমস্যা।একটি দেশ বা অঞ্চল এ সমস্যা এককভাবে মোকাবিলা করতে পারবে না।জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলা ও প্রশমনের জন্য দরকার বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমন্বিত ও ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা।কিয়োটো প্রটোকল ও প্যারিস চুক্তির দায় বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা থেকে পরিবেশ ও পৃথিবীকে রক্ষা করতে বিশ্ব নেতারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিলেন। এখন সময় এসেছে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও প্রতিশ্র“তির রক্ষার।

সংবিধানের বিধানকে সামনে রেখে পরিবেশ সংরক্ষণ ও সুরক্ষা সংক্রান্ত মামলায় বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট ‘ধারাবাহিকভাবে অর্থপূর্ণ বিচার’ করে চলেছে বলেও প্রশংসা করেন আবদুল হামিদ।তিনি বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ খুবই সংবেদনশীল। একই সঙ্গে বিচার বিভাগ পরিবেশের ভারসাম্য ও সংরক্ষণের বিরুদ্ধে সংগঠিত সকল কার্যক্রম প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে।পরিবেশ সুরক্ষায় ও এ সংক্রান্ত সাংবিধানিক বিধান রক্ষায় পরিবেশ আদালত’ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন. প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষর করা প্রথম দিকের দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে নিজস্ব সম্পদ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের তহবিল বাংলাদেশই প্রথম করতে পেরেছে।এই সম্মেলন থেকে বেরিয়ে আসা সুপারিশ ও পরামর্শ পরিবেশ সুরক্ষা ও সংরক্ষণে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করবে বলে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। অন্যদের মধ্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, এডিবির জেনারেল কাউন্সেল ক্রিস্টোফার স্টেফেন্স বক্তব্য দেন।জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ছাড়াও আফগানিস্তান, ভুটান, নেপাল ও মালয়েশিয়াসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের প্রধান বিচারপতিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।