bnp1

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের বিষয়ে খালেদা জিয়ার দেওয়া প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য সাক্ষাতের সময় চেয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ ও সাবেক সহ দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন বঙ্গবভনে চিঠি পৌঁছে দেন।

এর আগে বুধবার দুপুর দেড়টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছিলেন সাক্ষাতের সময় চেয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেবে বিএনপি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, আমরি খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।ওই সময় তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের বিষয়ে খালেদা জিয়া প্রস্তাব উত্থাপনের পরই তার একান্ত সচিব এবি এম সাত্তার রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিবকে ফোন দিয়ে সাক্ষাতের সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব আমাদের কিছু জানান নি। আজ আবার লিখিতভাবে সাক্ষাতের জন্য সময় চেয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেব। আমরা আশা করছি, রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে আমাদের প্রতিনিধি দলকে সাক্ষাতের একটা সুযোগ দেবেন।

অতীতেও নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিল বিএনপি। তাতে কোনো ফল হয়নি। তাহলে এবার এতো আশাবাদী হচ্ছেন কেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন রাষ্ট্রের অভিভাবক। আমরা তার উপর আস্থা রাখতে চাই। তার কাছ থেকে সঠিক দিকনির্দেশনা আমরা আশা করি।খালেদা জিয়ার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় বঙ্গভবনে টেলিফোন করে সাড়া না পাওয়ায় এবার রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দিয়েছে বিএনপি।তার আগে দুপুরে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রপতির সাক্ষাতের জন্য যোগােেযাগ করেও বঙ্গভবনের সাড়া না পাওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই চিঠি পাঠাচ্ছেন তারা।

দেশনেত্রীর প্রস্তাবাবলি পেশ করার জন্য তার একান্ত সচিব (এ বি এম আবদুস সাত্তার) রোববার মহামান্য রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিবের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএনপির তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দলের সাক্ষাতের সময় চেয়েছিলেন। এখন পর্যন্ত সামরিক সচিব এই বিষয়ে কিছু জানাননি।আমরা আজকে লিখিতভাবে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে চেয়ে চিঠি দিচ্ছি। আমরা আশা করছি, রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে তিনি আমাদের প্রতিনিধিদলকে সাক্ষাতের একটা সময় দেবেন, বলেন বিএনপি মহাসচিব।নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগে বাছাই কমিটি গঠনের রূপরেখা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা এবং সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ’ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের কয়েকটি ধারার সংশোধনসহ ১৩টি প্রস্তাব তুলে ধরে গত শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা।

আগামী ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিদায় নেবে। সংবিধান অনুযায়ী নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির।দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির ভাষায় বর্তমান নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন সব দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে করতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে আহ্বান রেখেছে বিএনপি।খালেদা বলেন, এই কমিশন হতে হবে ‘সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অথবা স্বাধীনতার পর প্রথম জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়েজাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে এমন সকল রাজনৈতিক দলের মতৈক্যের ভিত্তিতে।১৩ দফা প্রস্তাবে নির্বাচন কমিশন নিয়োগে বাছাই কমিটি গঠনের একটি রূপরেখা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা এবং সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের কয়েকটি ধারা সংশোধনের কথা বলেছেন খালেদা জিয়া।ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইতোমধ্েয বলেছে, খালেদার অন্তঃসারশূন্য প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার কোনো অবকাশ নেই।

ফখরুলের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে আসা সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দেওয়ার ব্যাখ্যা তুলে ধরেন।আমরা মানি বা না মানি, ভালো বা মন্দ, বাস্তবতার নিরিখে আমাদেরকে স্বীকার করতে হবে যে আমাদের একজন রাষ্ট্রপতি আছেন। রাষ্ট্রপতি ইস এন ইন্সটিটিউশন। কে ওখানে আছে, কীভাবে আছে, সেটা বড় কথা নয়।আমরা মনে করি, তিনি একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। সেখানে তাকে যদি আমরা উৎসাহী করতে পারি, আমার মনে হয়, এই সমস্যা সমাধানে তিনি একটি ভূমিকা রাখতে পারেন।