%e0%a6%9c%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a6%be-%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%b7%e0%a6%a6-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%9a%e0%a6%a8

জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১ ডিসেম্বর। যাচাই-বাছাই ৩ ও ৪ ডিসেম্বর আর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।রোববার নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ এ ঘোষণা দেন।স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা বাদে বাকি ৬১টি জেলা পরিষদে ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাদের প্রশাসক নিয়োগ করে সরকার। তখন স্থানীয় সরকার বিভাগসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা বলেছিলেন, ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে জেলা পরিষদ গঠন করা হবে। কিন্তু এত দিনেও জেলা পরিষদের নির্বাচন হয়নি।

বর্তমান আইন অনুযায়ী, একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য ও সংরক্ষিত আসনের পাঁচজন নারী সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ গঠন করা হবে। চেয়ারম্যানসহ এই ২০ জন সদস্যকে নির্বাচন করবেন সংশ্লিষ্ট এলাকার সিটি করপোরেশন (থাকলে), উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা।এদিকে জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসকদের কেউ জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে পদত্যাগ করতে হবে। নতুন এই বিধান যুক্ত করে গত মাসে জেলা পরিষদ (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০১৬ আইন করার অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। ৬১ জেলায় চেয়ারম্যান, সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে যারা প্রার্থী হতে আগ্রহী, তারা ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন।নির্বাচন কমিশন সেসব মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করবে ৩ ও ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

জনপ্রতিনিধিদের পরোক্ষ ভোটে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ আগেই ২৮ ডিসেম্বর দিন ঠ্কি করে দিয়েছিল। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ রোববার নির্দলীয় এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।১৯৮৯ সালে তিন পার্বত্য জেলায় একবারই সরাসরি নির্বাচন হয়েছিল। আর কোনো জেলা পরিষদ নির্বাচন হয়নি।

১৯৮৮ সালে এইচ এম এরশাদের সরকার প্রণীত স্থানীয় সরকার (জেলা পরিষদ) আইনে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে সরকার কর্তৃক নিয়োগ দেওয়ার বিধান ছিল; পড়ে আইনটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। ২০০০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচিত জেলা পরিষদ গঠনের জন্য নতুন আইন করে।

এরপর ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর সরকার ৬১ জেলায় আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের নেতাদের প্রশাসক নিয়োগ দেয়। অনির্বাচিত এই প্রশাসকদের মেয়াদ শেষেই ডিসেম্বরে নির্বাচন হচ্ছে।২৮ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকাল ২টা পর্যন্ত ভোট হবে। এ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ারও সুযোগ রয়েছে।প্রতি জেলাকে ১৫টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে বিভক্ত করে এ ভোট হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে হবে একটি করে ভোটকেন্দ্র।জেলা প্রশাসকরা এ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসাররা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। কোথাও কোথাও উপজেলা নির্বাচন অফিসারকেও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা করা হয়েছে।

আইন অনুযায়ী, প্রতিটি জেলায় স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের ভোটেই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য নির্বাচিত হবেন। প্রতিটি জেলায় ১৫ জন সাধারণ ও পাঁচজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য থাকবেন।
২৫ বছর বয়সী বাংলাদেশের যে কোনো ভোটার জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারলেও ভোট দিতে পারবেন না। আর জনপ্রতিনিধিরা ভোটার হলেও প্রার্থী হতে পারবেন না।সংসদ, সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন হলেও জেলা পরিষদ আইনে প্রত্যক্ষ ভোটের বিধান নেই।

প্রত্যেক জেলার অন্তর্ভুক্ত সিটি করপোরেশনের (যদি থাকে) মেয়র ও কাউন্সিলর, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ও ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর এবং ইউপির চেয়ারম্যান ও সদস্য জেলার পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার হবেন। তাদের ভোটেই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য নির্বাচিত হবেন।এ হিসেবে স্থানীয় সরকারের চার ধরনের প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬৭ হাজার নির্বাচিত প্রতিনিধি এ নির্বাচনে ভোট দেবেন।এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি ভোটার ইউনিয়ন পরিষদে। দেশে বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা সাড়ে চার ৪ হাজার। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে গড়ে ১৩ জন করে প্রায় ৬০ হাজারের মত নির্বাচিত প্রতিনিধি রয়েছেন।৪৮৮টি উপজেলা পরিষদে প্রায় দেড় হাজার; ৩২০টি পৌরসভায় সাড়ে ৫ হাজার এবং ১১টি সিটি করপোরেশনে প্রায় সাড়ে ৫০০ নির্বাচিত প্রতিনিধি রয়েছেন।