%e0%a6%a4%e0%a7%88%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%b0-%e0%a6%86%e0%a6%b2%e0%a6%ae-%e0%a6%96%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের মেয়র প্রার্থী হিসেবে তৈমুর আলম খন্দকারকে চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। তৈমুর আলম বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। কিছুদিন আগেও তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন।শুক্রবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক বৈঠকে তৈমুর আলমকে দলীয় প্রার্থী হতে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, তৈমুর আলম ও নারায়ণগঞ্জের কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

শনিবার দুপুরে টেলিফোনে তৈমুর আলমবলেন, রাতের বৈঠকে তাঁকে মেয়র প্রার্থী হতে বলা হয়েছে। তিনি দলের প্রতি অনুগত। তবে বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় ও নির্বাচনী ব্যবস্থায় তাঁর প্রার্থী হওয়ার কোনো আগ্রহ নেই। কেন আগ্রহ নেই, সেটাই চেয়ারপারসনকে বলেছেন। তবে দল যদি তাঁকে প্রার্থী করার ব্যাপারে অনড় থাকে, তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে ‘অনিচ্ছা’ প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। তবে তিনি বলেছেন, নির্বাচনের ব্যাপারে দলের চেয়ারপারসনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।শনিবার দুপুরে শহরের মাসদাইরে অবস্থিত নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তৈমুর আলম এ কথা বলেন।গতবারের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন চেয়ারপারসনের এ উপদেষ্টা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে একেবারে ভোটের ৭ ঘণ্টা আগে দলের সিদ্ধান্তের কারণে তাকে সরে দাঁড়াতে হয়। এবারও নির্বাচনে দলের জেলা-মহানগর শাখার পক্ষ থেকে তৈমুরকেই প্রার্থী হিসেবে চাওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, দলের নেতাকর্মীরা আমাকে নির্বাচনে চাইছেন, সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা দলে দলে আমার বাসায় এসে আমাকে নির্বাচনের জন্য অনুরোধ করছেন। নেতাকর্মীদের এতো ফোন আসছে যে, আমি মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে রেখেছি। সবাইকে জানিয়েছি নির্বাচনের ব্যাপারে দলীয় চেয়ারপারসনের সিদ্ধান্তই শেষ সিদ্ধান্ত, তবে আমি নির্বাচন করতে ইচ্ছুক নই। কারণ বিগত নির্বাচনে আমাকে প্রার্থী করে ভোটের ৭ ঘণ্টা বসিয়ে দেওয়া হয়, কিন্তু ঠিক কী কারণে আমাকে বসানো হয়েছে সে প্রশ্নের উত্তর আজও পাইনি। বিএনপির এ নেতা বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন যারা কিনা নির্বাচনের কারণে ১১ জন নিহত হলেও সেই সংবাদ জানে না বলে ঘোষণা দেয়, সেই নির্বাচন কমিশনের ওপর আমার বিন্দুমাত্র আস্থা নেই। তারপরও দলীয় নেত্রীর সিদ্ধান্তই হবে শেষ সিদ্ধান্ত। তিনি যা বলবেন দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে আমি তা পালন করবো।

দলীয় সূত্রমতে, শুক্রবার বিকেলে ঢাকায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে গিয়ে তার সঙ্গে বৈঠক করেন তৈমুর আলম। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি ও মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবুল কালাম, বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান মনির, যুগ্ম সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন খান, নগর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। বৈঠকে খালেদা জিয়া সিটি নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীদের সম্পর্কে জানতে চান। জবাবে নেতারাও তাদের এবং দলের অবস্থান তুলে ধরেন।বৈঠকে উপস্থিত নারায়ণগঞ্জের একজন নেতা বলেন, তৈমুর আলম নির্বাচন করতে চান না। কেন চান না, সেটাও তিনি ব্যাখ্যা করেছেন। এখন নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে এই নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করা সম্ভব নয় বলেই তৈমুর আলম মনে করেন। এই বিষয়গুলো তিনি দলীয় চেয়ারপারসনকে বারবার বলেছেন। ওই নেতা বলেন, তবে এটা ঠিক, বিএনপি প্রার্থী করলে তৈমুর আলম নির্বাচনে অংশ নেবেন।

গত বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের একপর্যায়ে সংবাদ সম্মেলন করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে।দুপুরে তৈমুর আলম বলেন, ভালো নির্বাচন না হলে প্রার্থী হয়ে কী লাভ। চেয়ারপারসনকে বিগত উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচনের কথা বলেছি। নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনের কথাও বলেছি। দলের নির্বাচিতদের মধ্যে যারা সরকারের দালালি করছে না, তারা সবাই হয় জেলে, নয়তো মেয়র, চেয়ারম্যান পদ থেকে বহিষ্কার হয়ে আছে। এ অবস্থায় নির্বাচন করার যৌক্তিকতা নিয়ে তাঁকে (চেয়ারপারসন) বলেছি।বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ছিলেন তৈমুর আলম। ভোটের আগের দিন বিএনপি ওই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়। যদিও বিএনপির এই সিদ্ধান্ত নিজের নয় বলে তখন জানিয়েছিলেন তিনি।

তৈমুর মনে করেন, দলের প্রতি অনুগত থাকায় তিনি দলীয় যেকোনো সিদ্ধান্ত মানবেন। তবে তিনি চেয়ারপারসনকে বলেছেন, নির্বাচন করার ব্যাপারে তাঁর আগ্রহ নেই। সেই কারণগুলোও ব্যাখ্যা করেছেন। এখন দেখা যাক, দল শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত দেয়।