28-10-16-obaidul-2চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে হাতাহাতিতে জড়িয়েছে দক্ষিণ জেলার নেতাকর্মীদের দুটি পক্ষ। শনিবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বক্তব্য রাখার এক পর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে। নগরীর লালদীঘি ময়দানে চলমান চট্টগ্রাম থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়া নেতাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দুই গ্র“পের চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে। নতুন সাধারণ সম্পাদকসহ চট্টগ্রামের নেতাদের জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আগে শনিবার সকাল সোয়া ১১টার দিকেও চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের দোতলায় হাতাহাতিতে জড়িয়েছে দক্ষিণ জেলার নেতাকর্মীদের দুটি পক্ষ। ।

বিকালে ঘটনাস্থলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের কর্মীরা হঠাৎ করেই নিজেদের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ি করতে থাকেন।এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে।বক্তব্যের মাঝেই ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন তাদের শান্ত হওয়ার আহবান জানান। এরপর তিনি বক্তব্য অব্যাহত রাখেন।চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ও পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাশেদ মনোয়ারের অনুসারীদের মধ্যে এই বিতন্ডার সময় ওবায়দুল কাদের দোতলার একটি কক্ষে ছিলেন।

পরে নিচতলায় নামার পরও দুই পক্ষ পরস্পরের উদ্দেশ্যে গালিগালাজ করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, সকাল সোয়া ১১টার দিকে সার্কিট হাউজের দ্বিতীয় তলায় সাধারণ সম্পাদককে ফুল দিতে জড়ো হয় দুই পক্ষ।এসময় তারা নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়। এর মধ্যে কয়েকজনকে ঘুষি চালাতেও দেখা যায়।ঘটনার সময় মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ও রাশেদ মনোয়ার ছাড়াও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন এবং শ্রম বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলম উপস্থিত ছিলেন।জানতে চাইলে মোতাহেরুল বলেন, তেমন কোনো সমস্যা হয়নি, ফুল তো সবাই দিলাম।হাতাহাতির ঘটনা উপস্থিত লোকজন দেখেছে জানালে মোতাহেরুল বলেন, সামান্য ব্যাপার, পার্টির মধ্যে এগুলো হয়।এ বিষয়ে পটিয়া উপজেলা সভাপতি রাশেদ বলেন, “আমরা সাধারণ সম্পাদককে ফুল দিতে গিয়েছিলাম। ওই সময় কিছু ‘সাইড টক’ হয়েছে।আমাদের একজন জুনিয়রকে মোতাহেরুল ইসলামের লোকজন গলা টিপে ধরে। এনিয়ে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে। পরে সাধারণ সম্পাদক কক্ষ থেকে বেরিয়ে দুই তলা থেকে নামার আগে তাকে ফুল দিয়েছি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের কিছু সমস্যার কথাও দলের সাধারণ সম্পাদককে বলে জানান রাশেদ।তিনি বলেন, “আমরা এলাকায় সাংগঠনিক কর্মসূচি পালন করতে পারছি না। সেটা উনাকে বলেছি। উনি কোনো মন্তব্য করেননি। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় উপজেলার বড়লিয়া ও শোভনদন্ডি ইউনিয়নের তৃণমূল নেতাদের প্রস্তাবিত প্রার্থীদের নাম বাদ দিয়ে কেন্দ্রে অন্য জমা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাশেদ মনোয়ার এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিনের।এ বিষয়ে গত অক্টোবরে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবরে তারা লিখিত অভিযোগ করেন।

গত ৩ অক্টোবর এ বিষয়ে লিখিতভাবে দলের সেসময়ের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদেরকেও জানানো হয়।এর দুই দিন পর ৫ অক্টোবর পটিয়ার ১৭টি ইউনিয়নের ৩৪ জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে ৩৩ জন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে লিখিতভাব অনাস্থা জানিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কাছে তাদের অপসারণের দাবি জানায়।শনিবার বিকেলে লালদীঘি মাঠে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা কমিটির যৌথ আয়োজনের দলের নতুন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ চট্টগ্রাম বিভাগের ১০ নেতাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।এর আগে বেলা পৌনে ১২টার দিকে সার্কিট হাউজের নিচতলায় আসেন ওবায়দুল কাদের।এসময় সেখানে জড়ো হওয়া নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। অনেক নেতাকর্মীকে তার সঙ্গে ‘সেলফি’ তুলতেও দেখা যায়। বেলা ১২টার দিকে সার্কিট হাউজে আসেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও দীপু মনি, সভাপতিম-লীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।এর কিছুক্ষণ পর আসেন উত্তর জেলার সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী এবং কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। তারা সবাই ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।