বাংলার বাউল গান এখন বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। এ স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কো। বিশ্বের ৪৩ টি বাক ও বিমূর্ত ঐতিহ্যের তালিকা করতে গিয়ে ইউনেস্কো বাংলাদেশের বাউল গানকে অসাধারণ সৃষ্টি বলে আখ্যা দিয়ে একে বিশ্ব সভ্যতার সম্পদ বলে ঘোষণা দিয়েছে।
বাঙালির দর্শনচেতনার প্রধানতম প্রাণপুরুষ ফকির লালন শাহের সৃষ্টিকর্ম ও তার বিচরণক্ষেত্র নিয়ে গবেষণা ও এদেশের আপামর জনসাধারণের লুপ্তপ্রায় সাংস্কৃতিক বোধকে আরও প্রাণবন্ত করার নিমিত্তে, দেশের ঐতিহ্যময় সাংস্কৃতিক ধারা ও দর্শন চিন্তার ধারাবাহিক ইতিহাস নির্মাণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে জেলা প্রশাসন কুষ্টিয়ার ব্যবস্থাপনায়, জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও লালন একাডেমি কুষ্টিয়ার সহযোগিতায় ছেঁউড়িয়ায় ফকির সাঁইজির মাজার প্রাঙ্গণে আগামী ১০ ও ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুইদিনব্যাপী লালন উৎসব ও মেলা ২০১৬।
উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা থেকে প্রতিশ্রুতিশীল ৬৪ জন লালন সঙ্গীত শিল্পী, ৪০ জন বাউল ও জনপ্রিয় লালন সঙ্গীত শিল্পী, সঙ্গীত পরিবেশন করবেন। এছাড়াও লালন দর্শন, লালন সঙ্গীতের সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রসার বিষয়ক সেমিনার ও মুক্ত আলোচনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ লক্ষে আজ ০৬ নভেম্বর ২০১৬ রবিবার বেলা ১২টায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার হলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক জনাব লিয়াকত আলী লাকী এর সভাপতিত্বে একাডেমির সচিব জনাব জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী, প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক জনাব ইকবাল হোসেন, প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক জনাব শাওকাত ফারুক, সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক জনাব সোহরাব উদ্দিন, উপপরিচালক শামীমা আক্তার জাহান, অর্থ বিভাগের উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম প্রমূখ। ছবি সংযুক্ত।
সংবাদ সম্মেলনে মহাপরিচালক বলেন এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য শুধু উৎসব বা মেলা আয়োজন নয়, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হলো লালন একাডেমীর লালন ভাবাদর্শে নান্দনিকিকরণ, আন্তর্জাতিক মানের একটি লালন ইনস্টিটিউট নির্মাণ, যেখানে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন ছাত্র ছাত্রীরা ১ বছরের ডিপ্লোমা কোর্স করতে পারবে, প্রতি বছর পালিত হবে লালন উৎসব, একটি সাঁইজির সমাধীস্থলে অন্যটি পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যান্য জেলায়, বাউল সঙ্গীত পরিবেশন ও সংগ্রহ হবে এ কর্মসূচির অন্যতম কাজ, বাউল গানের প্রসারের লক্ষ্যে প্রতিবছর লালন আখড়ায় মেলা।