%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%a8%e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%aa%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a7%87-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a6%b2

উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপটি সামান্য উত্তর দিকে অগ্রসর হয়েছে। তবে এটি এখনো ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়নি। ঘূর্ণিঝড়ে রূপ না নিলেও এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত আছে। লঘুচাপের কারণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শুক্রবার ও শনিবার বৃষ্টি হয়েছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। এদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বরিশালসহ দেশের দক্ষিণ উপকূলীয় জেলাগুলোয় শুক্রবার রাত থেকে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা থমকে গেছে। বৈরী আবহাওয়ায় কারণে বরিশাল থেকে অভ্যন্তরীণ নৌপথে একতলা ছোট লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। শনিবার সকাল থেকে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

নিম্নচাপটি রোববার সকাল নাগাদ বরিশাল ও চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এর ফলে উপকূলীয় জেলাগুলোতে ভারী বর্ষণ ও এসব জেলার ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। জেলার চর ও উপকূলীয় এলাকা দুই থেকে তিন ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, শনিবার দুপুর ১২ টার দিকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩০ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ৫৯৫ কিলোমিটার, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০০ কিলোমিটার ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে নিম্নচাপটি অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। এ জন্য এই চারটি সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা ও ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে যদি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়, তাহলে এটি খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের দিকে আঘাত হানতে পারে। তবে বৃষ্টি যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে নিম্নচাপটি সাগরেই দুর্বল হয়ে যেতে পারে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি রোববার সকালে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর; সমুদ্র বন্দরগুলোতে ৩ নম্বরে পরিবর্তে ৪ নম্বর সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।নিম্নচাপটির প্রভাবে চট্টগ্রাম থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত উপকূলীয় জেলাগুলোতে ভারি বর্ষণ ও দমকা হাওয়া বয়ে যাওয়ার আভাসও দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বুলেটিনে বলা হয়, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পূর্ব-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।

নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ এখন ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সঙ্কেত নামিয়ে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলেছে।নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ২-৩ ফুট উঁচু জোয়ার সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।নিম্নচাপের প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে শুক্রবার সকাল থেকে। শনিবারও তা অব্যাহত রয়েছে।চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠী, বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরায় ভারি বর্ষণের সঙ্গে ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।এই নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে তার নাম হবে নাদা। এ নামটি ওমানের দেওয়া।এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দপ্তর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেল এ অঞ্চলে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের একটি তালিকা করে রেখেছে। কোনো নিম্নচাপ সাইক্লোনের রূপ নিলে ওই তালিকা থেকে নির্ধারিত নামটি বরাদ্দ হয়।গত মাসের শেষ সপ্তাহে একটি নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিলে মিয়ানমারের প্রস্তাব অনুসারে নাম নাম দেওয়া হয় কায়ান্ট, যার অর্থ কুমির। কায়ান্ট দুর্বল হয়ে আবার সাগরেই নিম্নচাপে পরিণত হয়; সেটি উপকূল অতিক্রম করেনি। এদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বরিশালসহ দেশের দক্ষিণ উপকূলীয় জেলাগুলোয় গতকাল শুক্রবার রাত থেকে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা থমকে গেছে। বৈরী আবহাওয়ায় কারণে বরিশাল থেকে অভ্যন্তরীণ নৌপথে একতলা ছোট লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজ শনিবার সকাল থেকে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশাল অঞ্চলের নৌ নিরাপত্তা বিভাগের উপপরিচালক আজমল হুদা বলেন, নৌবন্দরগুলোয় আবহাওয়া অধিদপ্তর ২ নম্বর সতর্কসংকেত জারি করায় বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটে ৬৫ ফুট দৈর্ঘ্যরে নিচের লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তায় সতর্কসংকেত কমানোর আগ পর্যন্ত এ নির্দেশ বলবৎ থাকবে।বরিশাল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মো. আনিসুর রহমান জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে শুক্রবার থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এ অঞ্চলে ১২ দশমিক শূন্য ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। নিম্নচাপটি পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে অবস্থান করছে। এতে বরিশাল, বরগুনা ও পটুয়াখালী নদীবন্দরে ২ নম্বর সতর্কসংকেত ও নিকটবর্তী পায়রাসমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত জারি করা হয়েছে।