রাজধানীর বনানীতে পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক গভর্ণর মোনায়েম খান পরিবারের দখলে থাকা স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটার দিকে অভিযান শুরু হয়। অভিযান শেষে বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র অনিসুল হক বলেন, বনানী কবরস্থানের পাশে ১০ কাঠা জমি ৫০ বছর ধরে অবৈধভাবে দখল করে রেখেছিল মোনায়েম গং। আজ এ সম্পত্তি উদ্ধার করা হলো। ওই জমিটি বাউন্ডারি দিয়ে ঘেরাও করা ছিল। একটি গাড়ির শো’রুমও ছিল সেখানে। মেয়র জানান, দখলমুক্ত এই জমি রাস্তা প্রসারণের কাজে ব্যবহার করা হবে। স্থানীয়দের বসার স্থান হিসেবেও এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। দেশের অন্যান্য বেদখলকৃত জমি উদ্ধারে বিশেষ আদালত গঠনের দাবি জানান আনিসুল হক। এতদিন কেন এই জমি দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়নি তা খতিয়ে দেখতে তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
রাজধানীর বনানী কবরস্থান সড়কে সরকারি জমি প্রায় ৫ বিঘা জমি দখল করে একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় দেশবিরোধী অন্যতম কুচক্রী ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খানের গড়ে তোলা ‘বাগ-ই-মোনায়েম’। কোনো বৈধ নথি দেখাতে না পারায় বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) মূল সড়ক থেকে ১৬ ফুট ভেতরে প্রায় ১০ কাঠা জমির ওপর গড়ে তোলা অবৈধ ভবন ভেঙে ফেলা হয়।তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গর্ভনর মোনায়েম খান ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিহত হন। তার বরাদ্দ নেওয়া জমির পরিমাণ ১০ কাঠা। ১১০/এ নম্বরে ভুয়া হোল্ডিং বানিয়ে এ জমি দখল করা হয়। কেবল তাই নয়, সেই বাড়িতেই মোনায়েম খানের দুই কন্যা গড়ে তুলেছেন অন্বেষা নামে একটি স্কুলও। তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) একটি দুর্নীতিবাজ চক্র।এসময় অবৈধভাবে গড়ে তোলা গাড়ির শো’রুমও ভেঙে ফেলা হয়েছে।এদিন (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৪টার দিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক সংবাদ সম্মেলনে ওই জায়গা সড়কের জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা করবেন।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ আনোয়ারুল ইসলাম বনানী কবরস্থানের সামনে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফিং করার পরপরই শুরু হয় আলোচিত ‘বাগ-ই-মোনায়েম’ বাড়িটির উচ্ছেদ কার্যক্রম।রাজধানীর অভিজাত বনানী কবরস্থান সড়কে সরকারি জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ‘বাগ-ই-মোনায়েম’। কুখ্যাত মোনায়েম খানের দুই কন্যা এখানে গড়ে তুলেছেন অন্বেষা নামে একটি স্কুলও। তাদের সহযোগী হিসেবে রয়েছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) একটি দুর্নীতিবাজ চক্র। মোনায়েম খান হচ্ছেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গর্ভনর। মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিহত হন ১৯৭১ সালে। মোনায়েম খানের বরাদ্দ নেওয়া জমির পরিমাণ ১০ কাঠা। ১১০/এ নম্বরে ভুয়া হোল্ডিং বানিয়ে এ জমি দখল করা হয়।
তৎকালীন সময়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর এক অসাধু চক্রের সহযোগিতায় কুচক্রি মোনায়েম খান জবরদখল করে গড়ে তোলেন রাজপ্রাসাদের মতো এ বাড়িটি। বনানী কবরস্থানের দিকে যেতেই চারদিকে ৭ ফুট উঁচু প্রাচীরে ঘেরা বাড়িটি চোখে পড়বে সবার। বেসরকারি মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের পরের গলিতেই বাড়িটির অবস্থান। বাড়ির চারিদিকে নারিকেল গাছ, আমগাছসহ অসংখ্য ফল ও ফুল গাছের সমাহার।এয়ারপোর্ট রোড থেকে বনানী কবরস্থানের দিকে যেতে প্রথমেই চোখে পড়বে বাগ-ই-মোনায়েম। মোনায়েম খানের বাড়ির পূর্ব পাশের গেটে একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল রয়েছে। যার নাম অন্বেষা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। বাড়ির সঙ্গেই গড়ে তোলা হয়েছে মসজিদ। গত ২৬ অক্টোবর সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বাড়ি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। অবৈধ দখলমুক্ত করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়।বাড়িটির বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। তৎকালীন সময়ে আইয়ুব খানের এ হাতিয়ার মোনায়েম খান বনানীর মতো অভিজাত এলাকায় জায়গা নিজের নামে লিখে নেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী মোনায়েম খান ১৯৭১ সালের ১৩ অক্টোবর ঢাকার বনানীর এ বাড়িতে মুক্তিবাহিনীর গুলিতে আহত হন। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।