adb-ed-21354

আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশকে ৮০০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ সহায়তা দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।২০১৬ থেকে ২০২০ সাল মেয়াদে বাংলাদেশ সহযোগিতা কৌশলপত্রের আওতায় এ ঋণ সহায়তা দেবে সংস্থাটি।বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ৮০ টাকা) অনুযায়ী এর পরিমাণ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। এর আগের পাঁচ বছরে বাংলাদেশকে ৫০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে এডিবি। সে অনুযায়ী আগামী পাঁচ বছরের জন্য সহায়তার পরিমাণ বাড়ালো এডিবি।বুধবার রাজধানীর শেরে বাংলানগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে এই সহযোগিতা কৌশলপত্রের উদ্বোধন করা হয়েছে।এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন বক্তব্য রাখেন। কৌশলপত্র উপস্থাপন করেন এডিবির আবাসিক প্রধান কাজুহিকো হিগুচি।

কৌশলপত্রে উল্লেখ করা হয়, আগামী বছরগুলোর জন্য রেলের সক্ষমতা ও নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি, চট্্রগ্রাম বন্দর উন্নয়ন, অর্থনৈতিক করিডোরের উন্নয়ন, জ¦ালানীখাতের অবকাঠামো বিশেষ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিতরণ, আঞ্চলিক জ¦ালানি বাণিজ্য ও নবায়নযোগ্য জ¦ালানি ব্যবস্থার উন্নয়ন, পানি এবং নগর সেবা বাড়ানো, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলবায়ু সহনশীল গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, মানবসম্পদ এবং জীবনযাত্রার মানের উন্নয়নে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।অনুষ্ঠানে কাজুহিকো হিগুচি বলেন, বাংলাদেশ সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনের মাধ্যমে দারিদ্র দূর করছে এবং মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। এডিবির নতুন কৌশলপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের নতুন আয়ের উৎস তৈরিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং গ্রামীণ অবকাঠামো ও জীবনযাত্রার মান্নোয়নে একসঙ্গে কাজ করবে এডিবি।তিনি জানান, আগামী পাঁচ বছরের জন্য যে ঋণ ঘোষণা করা হয়েছে তার একটি বড় অংশ সহজ শর্তে দেওয়া হবে এবং বাকীটা লাইবর রেটের সাথে শুণ্য ৫ শতাংশ যোগ করে ঋণের সুদহার নির্ধারণ করা হবে।

সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এই ঋণ সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনের পাশাপাশি টেকসই উন্নয়নের পথে হাঁটছে বাংলাদেশ। ৭ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি অনেক বেশি অন্তর্ভূক্তিমূলক। এই প্রবৃদ্ধিতে দেশের সবার অংশীদারিত্ব রয়েছে।

বৈদেশিক ঋণ সহায়তা ব্যবহারের সক্ষমতা আগের তুলনায় বেড়েছে বলে তিনি দাবি করেন।সচিব বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্চ। এই চ্যালেঞ্চ মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, বেসরকারি বিনিয়োগ সম্প্রসারণে কর কাঠামোসহ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক সংস্কার আনা হয়েছে। পাশাপাশি অবকাঠামো উন্নয়নকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।উল্লেখ্য, গত পাঁচ বছরে অর্থাৎ ২০১১-১৫ কৌশলপত্রে বাংলাদেশকে ৫০০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু এসময় ছাড়কৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৪০ কোটি ডলার।

১৯৭৩ সালে এডিবির সদস্যপদ লাভ করার পর থেকে এ সংস্থা তাদের আর্থিক সহায়তার একটি বড় অংশ বাংলাদেশকে প্রদান করে আসছে। এ যাবৎ বাংলাদেশকে ১৬ বিলিয়ন ডলারের অধিক ঋণ সহায়তা দিয়েছে সংস্থাটি।