%e0%a6%85%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a7%87%e0%a6%87-%e0%a6%a6%e0%a7%81%e0%a6%87-%e0%a6%9b%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0রাজধানীর গুলিস্তানে ফুটপাত থেকে হকারদের উচ্ছেদের সময় অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি ছোড়ার ঘটনায় অবশেষে অস্ত্রধারী দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।উচ্ছেদের ঘটনাটি পল্টন থানার আওতাধীন গুলিস্তান এলাকায় ঘটলেও শাহবাগ থানা এলাকায় ফাঁকা গুলির ঘটনা ঘটে। সোমবার রাতে শাহবাগ থানার এসআই আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।মামলায় বহিষ্কৃত ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাব্বির হোসেন এবং ওয়ারী থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগ আনা হয়েছে।শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দীক মঙ্গলবার দুপুরে টেলিফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে সোমবার গুলিস্তানের হকার মো.সিরাজ বাদী হয়ে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা মো. সাব্বির হোসেন এবং মো. আশিকসহ অজ্ঞাতনামা শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে পল্টন থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ভয়ভীতি প্রদর্শন, চুরি, ভাংচুর ও মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে।অন্যদিকে মামলা দায়েরের আগে ওই দুই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশে ছাত্রলীগের ওই দুই নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক দেলোয়ার শাহজাদা।জানা গেছে, মিডিয়ায় অস্ত্র হাতে ছবি প্রকাশের পর বিপদ আঁচ করতে পেরে দেশ ছেড়েছেন ঢাকা দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন। সোমবার সকালে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছে।পল্টন থানার ওসি রফিকুল ইসলাম যুগান্তরকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার গুলিস্তানে হকার উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে অস্ত্র হাতে যাদের দেখা গেছে তাদের গ্রেফতারের পরই সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে। অস্ত্র দুটি তারা কোথা থেকে পেয়েছেন, কেন অস্ত্র হাতে তারা প্রকাশ্যে এসেছেন এবং অস্ত্র প্রদর্শন করেছেন- সে সম্পর্কেও বিস্তারিত জানা যাবে।

তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সরকার ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা জিরো টলারেন্স দেখানোর নির্দেশ দিয়েছেন। শীর্ষ পর্যায় থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।পল্টন থানার ওসি জানান, বৃহস্পতিবার দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ওই উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়টি তিনি অবগত ছিলেন না।তিনি বলেন, যেকোনও অভিযান পরিচালনায় আইনশৃংখলা পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায় সেজন্য পুলিশ চেয়ে আবেদন করার নিয়ম রয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট এলাকার থানা পুলিশকে বিষয়টি জানানোর নিয়ম রয়েছে।তবে বৃহস্পতিবারের অভিযানের বিষয়ে আগেভাগে পুলিশকে কিছুই জানানো হয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন। পরে খবর পেয়ে তিনি ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।ছাত্রলীগের দুই নেতার অস্ত্র প্রদর্শন ও গুলি ছোড়ার বিষয়ে ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর তিনি থানায় ফিরে এ ব্যাপারে সাধারণ ডায়েরি করেন।বৃহস্পতিবার ডিএসসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ ও মামুন সরদার এবং প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা খালিদ আহমেদ গুলিস্তান এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। এ সময় পাতাল মার্কেটের ৯ ব্যবসায়ীকে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।অভিযান চলাকালে পাতাল মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ওরফে আনু হাজী ম্যাজিস্ট্রেটকে বাধা দেন। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে আনু হাজীকে আটক করে সিটি কর্পোরেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হকার ও ব্যবসায়ীদের একটি দল নগর ভবনে যায়।বিষয়টি জানার পর মেয়র সাঈদ খোকন হকারদের একটি প্রতিনিধি দলকে তার কক্ষে কথা বলার জন্য ডাকেন। মেয়রের কক্ষেই তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এর কিছু সময় পরই ছাত্রলীগ ও নগর ভবনের কিছু কর্মচারী হকারদের ধাওয়া দিয়ে গুলিস্তানে নিয়ে আসেন। হকাররাও পাল্টা তাদের ধাওয়া দেন।দু’পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার সময় ছাত্রলীগ ঢাকা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন এবং ওয়ারী থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিককে অস্ত্র হাতে জটলার মধ্যে দেখা যায়। হকার ও ব্যবসায়ীদের ধাওয়া করতেও তাদের দেখা যায়।ব্যবসায়ীদের দাবি, ছাত্রলীগ নেতারা এ সময় কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়েন। এদিকে পরদিন পত্র-পত্রিকায় অস্ত্র হাতে ছাত্রলীগ নেতাদের ছবি ছাপা হওয়ার পর বিব্রত পরিস্থিতিতে পড়ে ক্ষমতাসীন দল। এ পরিস্থিতিতে হাইকমান্ডের নির্দেশনায় সোমবার ছাত্রলীগের ওই দুই নেতাকে বহিষ্কার করা হয়।