%e0%a6%b8%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a7%9f%e0%a6%be-%e0%a6%b9%e0%a6%9a%e0%a7%8d%e0%a6%9b%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%93%e0%a7%9c%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be

জধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের অন্যতম নৌপথ হচ্ছে মাদারীপুর জেলার শিবচরের কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া ঘাট। অতীতে কাওড়াকান্দি-মাওয়া নামে পরিচিত ছিল এই নৌরুটটি। পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজের জন্য মুন্সীগঞ্জের মাওয়া থেকে ঘাট সরিয়ে শিমুলিয়ায় স্থানান্তর করায় কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া নামে পরিচিত এখন এই নৌরু। বর্তমানে কাওড়াকান্দি ঘাট সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কাঠালবাড়ি ইউনিয়নের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ফেরী ঘাটে। তাই ছোট্ট পরিসরের এই ঘাটটিতে চলছে বড় পরিসর করার কর্মজজ্ঞ।

দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার লাখ লাখ মানুষ এই নৌরুট দিয়ে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। কাওড়াকান্দি এবং শিমুলিয়া নৌপথের দূরত্ব বর্তমানে প্রায় ১৫ কিলোমিটার। এই নৌপথে পারাপারের জন্য ৮৬টি লঞ্চ, ২শতাধিক স্পিড বোট ও ১৭টি ফেরি রয়েছে। লঞ্চ ও ফেরিতে নৌযানের কার্যক্ষমতা ভেদে পদ্মা পার হতে সময় লেগে যায় দেড় ঘণ্টা। বৈরী আবহাওয়া থাকলে কখনো কখনো দুই ঘণ্টাও লেগে যায় পদ্মা পার হতে। এই দীর্ঘ নৌপথের দূরত্ব কমিয়ে আনতে অনেক দিন ধরেই ভাবনা-চিন্তা করছিলেন কর্তৃপক্ষ। অতীতে নৌ-পরিবহন মন্ত্রীও দূরত্ব কমিয়ে আনার বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ বিষয়ক কথা বলেছিলেন বিভিন্ন ব্রিফিংয়ে। সেই সিদ্ধান্ত এখন বাস্তবায়নের পথে। কাওড়াকান্দি থেকে ঘাট সরিয়ে ৬ কিলোমিটার দূরে শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ঘাটে স্থানান্তর এখন সময়ের ব্যাপার।

ইতিমধ্যেই নৌপরিবহনমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টরা কাঁঠালবাড়ির ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ঘাট এলাকা ঘুরে দেখেছে ঘাট সরিয়ে আনার বিষয়ে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে ঘাট স্থানান্তরের কাজ শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। বর্তমানে চলছে ঘাট নির্মাণ কাজ। আর এতে করে নৌপথের দূরত্ব কমবে প্রায় ৬ কিলোমিটার। সেই সঙ্গে নদী পারাপারে আর যাত্রীদের লঞ্চ বা ফেরিতে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে হবে না। আর কমবে জ্বালানি খরচও।

বর্তমানে প্রায় ১৫ কিলোমিটার নৌ-পথ অতিক্রম করতে একটি রো রো ফেরির সময় লাগে দেড় ঘণ্টা। টানা ফেরিতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা থেকে আড়াই ঘণ্টা। সম্প্রসারিত কাঁঠালবাড়িতে ঘাট সরিয়ে নেয়া হলে প্রত্যেকটি নৌ-যানের লোড-আনলোড করতে আধা ঘণ্টা থেকে পৌনে এক ঘণ্টা সময় কম লাগবে নৌযাত্রায়।

আর ঘাট এলাকার দীর্ঘ তিন কিলোমিটার যানজটেরও অবসান বলে বলে আশা করা যাচ্ছে আর যাত্রীদের দুর্ভোগও কমবে এতে করে।

এদিকে পাঁচ্চর থেকে এ্যাপ্রোচ সড়কের পাশ দিয়েও একটি বিকল্প রাস্তা করা হয়েছে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে পৌঁছাতে। এ ছাড়াও কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে পদ্মার পার হয়ে চলে যাওয়া রাস্তাটি সংস্কার করা হলেও কাঁঠালবাড়ী ঘাটে সহজেই পৌঁছানো যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

শিমুলিয়া ও কাওড়াকান্দি নৌ-রুটের বিআইডব্লিউটিএ’র সংরক্ষণ ও নৌ-যান পরিচালনা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আজগর জানান, নতুন নৌ-ঘাটটি চালু হলে দূরত্ব কমার পাশাপাশি ভোগান্তি, পরিবহন ব্যয় এবং সময় বাঁচবে। আশা করা যাচ্ছে ১৮ই ডিসেম্বর বা তারপরে যে কোনো সময় ঘাটটি চালু হতে পারে। বর্তমানে পুরোদমে চলছে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ঘাটটির নির্মাণ কাজ।’

বিআইডব্লিউটিসি’র কাওড়াকান্দি ঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম মিয়া বলেন,‘ কাওড়াকান্দি থেকে ঘাট সরিয়ে কাঁঠালবাড়ীর ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ফেরী ঘাটে স্থানান্তর করা হলে ফেরি চলাচলে সময় অনেক কম লাগবে। জ্বালানি খরচও অনেক কমবে। তাছাড়া ঘাট এলাকায় যানজটের পরিমাণও কমে যাবে অনেক। যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে স্বল্প সময়ে পদ্মা পার হতে পারবে।’

কাওড়াকান্দি ঘাটের লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি আতাহার বেপরী বলেন, মাদারীপুরের কাঠালবাড়ি ইউনিয়নের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ফেরী ঘাটটি দিয়ে শরীয়তপুর জেলা ও শিবচর উপজেলার মানুষেরা ঢাকায় যাতায়াত করতেন। ফলে এই ঘাটটি খুব ছোট পরিসরে পরিচালনা করা হতো। কিন্তু বর্তমান সরকার কাওড়াকান্দি ঘাটটি সরিয়ে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ঘাটটিকে বৃহৎ পরিসরে নির্মাণ করে এই ঘাটটিকেই দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের ঢাকার সাথে যোগাযোগের প্রধান করিডোর হিসেবে চালু করার জন্য বর্তমানে নির্মাণ কাজ চলছে। খুব শীঘ্রই ঘাটটি চালু হয়ে যাবে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি অর্ধেকে নেমে আসবে।