%e0%a6%a2%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be-%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%a1%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%b2

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ধর্ষিত পাঁচ বছরের শিশুটির চিকিৎসার জন্য আট সদস্যের বোর্ড গঠন করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।গাইনি বিভাগের প্রধান ফেরদৌসি ইসলামের নেতৃত্বে এই বোর্ড করা হয়েছে বলে হাসপাতালের উপ-পরিচালক খাজা আব্দুল গফুর জানিয়েছেন।বোর্ডের সদস্যরা হলেন- আশরাফ উল হক কাজল, আমানুর রসুল, জিল্লুর রহমান, সাদিয়া আনোয়ার, মো. আবুল কালাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. মোজাম্মেল হোসেন।

সমন্বয়ক হিসেবে রয়েছেন বিলকিস বেগম।দিনাজপুরে ধর্ষণের শিকার শিশুটির প্রজনন অঙ্গের ক্ষত হাড় পর্যন্ত পৌঁছেছে। এতে ওই অঙ্গে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। তাই এই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণই এখন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।বুধবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটির শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর আগে চেতনানাশক দিয়ে শিশুটিকে অজ্ঞান করে নেওয়া হয়। হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান আশরাফ-উল হক এসব তথ্য জানান।

আশরাফ-উল হক বলেন, ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিশুটির প্রজনন অঙ্গ ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। শিশুটির শরীরে অস্ত্রোপচারের জন্য এক থেকে দুই মাস অপেক্ষা করতে হবে। বর্তমানে তার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মানসিক অবস্থা কিছুটা ভালো হলে শিশুটি বাড়ি ফিরতে পারবে। ভবিষ্যতে অস্ত্রোপচার করে শিশুটির প্রজনন অঙ্গকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদী এ চিকিৎসক।পাঁচ বছরের এই শিশুকে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস (ওসিসি) সেন্টারে ভর্তি করা হয়। ওর মাথা, গলা, হাত ও পায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। শরীরে ছিল কামড়ের দাগ। আর ঊরুতে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়ার ক্ষত।

গত মঙ্গলবার শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার পর অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়। কিন্তু সেদিন আর শিশুটিকে পাওয়া যায়নি। পরের দিন ভোরে শিশুটিকে তার বাড়ির কাছে একটি হলুদখেতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল, তারপর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে শিশুটি এখন ওসিসিতে। এ ঘটনায় সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে শিশুটি বড় জ্যাঠা বা বড় আব্বু বলে ডাকত বলে শিশুটির পরিবার দাবি করে।গত ১৮ অক্টোবর পার্বতীপুর উপজেলার সিঙ্গীমারী জমিরহাট গ্রামের ওই শিশু বাড়ির সামনে থেকে নিখোঁজ হয়। সন্ধান না পেয়ে ওইদিন রাতে তার বাবা পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

পরদিন ভোরে বাড়ির পাশে একটি হলুদ ক্ষেত থেকে মেয়েটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পার্বতীপুর ল্যাম্প হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে পাঠানো হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। শিশুটির চিকিৎসার বিষয়ে মেডিকেল বোর্ডের সমন্বয়ক বিলকিস বেগম বলেন, তাকে এখন পোস্ট অপারেটিভে রাখা হয়েছে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টায় বোর্ড মিটিং পরবর্তি করণীয় ঠিক করা হবে।

গত ২০ অক্টোবর রাতে শিশুটির বাবা একই গ্রামের জহির উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪২) ও আফজাল হোসেন কবিরাজকে (৪৮) আসামি করে পার্বতীপুর মডেল থানায় ধর্ষণ মামলা করেছেন।মামলার প্রধান আসামি সাইফুলকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। অপর আসামি পলাতক।