শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়েছে বিএনপি।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ওবায়দুল কাদের দলের নতুন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় তাঁদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, বিএনপি আশা করে গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কাজ করবেন।
চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রয়াত চাষী নজরুল ইসলামের জন্মদিন উপলক্ষে রোববার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কচিকাঁচা ভবন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় অংশ নেন মির্জা ফখরুল। জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। আলোচনা সভা শেষে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সাংবাদিকদের চিরকুট পেয়েছি। জাতির জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ খবর পেয়েছি।আওয়ামী লীগের সম্মেলনে শেখ হাসিনা আবার সভাপতি হয়েছেন এবং ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। আমি তাদেরকে (নতুন কমিটি) অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।ফখরুল বলেন, একই সঙ্গে আবারও এই প্রত্যাশা করছি যে, জাতির যে আশা, যে আকাঙ্খা গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া, মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া তার জন্য তারা কাজ করবেন।ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন রোববার বিকালে নির্বাচনী অধিবেশনে দলটির সভাপতি পদে শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, জনগণের জন্য, দেশের মানুষের যে চাহিদা তার জন্য তারা (আওয়ামী লীগ) সম্মেলনে কিছুই বলেননি। এই সম্মেলনে সেই মূল বিষয়টাই নেই। আজ বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক সংকট হচ্ছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। সেই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য তারা কি করবেন, সেটা তারা বলেননি।মানুষের অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠার জন্য কি করবেন, সেটা তারা বলেনি। ভোটের যে অধিকার তারা ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন, সেই অধিকারকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কী করবেন তা তারা বলেননি।এর আগে ওই আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সম্মেলনের উৎসব করেছে। আলোকসজ্জার রেকর্ড করেছে। কিন্তু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ কী করবে তা নিয়ে কোনো বক্তব্য ছিল না। বিএনপি আশা করেছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংলাপ এবং বিরোধী দলের সঙ্গে কীভাবে সমঝোতা করা যায়Ñতার একটি নির্দেশনা সম্মেলনে দেবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটি পাওয়া যায়নি। তাই রাজনৈতিক সংকট অনিশ্চয়তার মধ্যেই থেকে গেছে। এই অনিশ্চয়তা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, সারা দেশ এখন কারাগারে পরিণত হয়েছে। মানুষের কথা বলার, সংগঠন করার অধিকার হরণ করা হয়েছে। গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। এই অবস্থায় তিনি ভয়কে দূর করে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।অনুষ্ঠানের প্রয়াত চলচিত্রকারের জীবন-কর্মের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়। জোটের সহ-সভাপতি প্রয়াত চাষী নজরুল ইসলামের সহধর্মিনী জ্যোৎস্না কাজীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামের পরিচালনায় আলোচনা সভায় সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ইউসুফ হায়দার, বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য নাজমুল হক নান্নু, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া ও জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক দলের সাধারণ সম্পাদক মুনির খান বক্তব্য দেন। এ সময় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আওয়ামী লীগের ২০ তম জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে দলের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরের নাম ঘোষণা করা হয়। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মির্জা ফখরুল তাঁদের অভিনন্দন জানান।