ইরাকের কিরকুক নগরীতে জিহাদি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর চলমান হামলায় অন্তত ৪৬ জন নিহত হয়েছে। এদের অধিকাংশই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।শনিবার নিরাপত্তা ও হাসপাতাল সূত্রে একথা বলা হয়েছে।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বার্তা সংস্থা এএফপি’কে বলেন, আইএস জিহাদীদের সঙ্গে সংঘর্ষে আমাদের ৪৬ জন নিহত ও ১৩৩ জন আহত হয়েছে। এদের অধিকাংশই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।কিরকুকের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিহতের এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছে।ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরো বলেন, শুক্রবার ভোরে অভিযান শুরুর পর থেকে অন্তত ২৫ জিহাদি হামলাকারীও নিহত হয়েছে।এদিকে, ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনী শনিবার ইসলামিক স্টেট জিহাদিদের কাছ থেকে মসুলের কাছের হামদানিয়া শহর পুনরুদ্ধার করেছে।এক নিরাপত্তা সূত্র বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে জানায়, নগরীর আশপাশের আরো ভূখ- পুনরুদ্ধারে বড় ধরনের অভিযান চলছে।
এদিকে, ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মসুলে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের বিভিন্ন স্থাপনা বা আস্তানার কাছাকাছি সাধারণ বেসামরিক মানুষজনকে রাখা হয়েছে।সম্ভাব্য মানবঢাল হিসেবে তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন।মসুলের আশপাশের গ্রামগুলো থেকে ৫৫০টি পরিবারকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহারের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে বলে শুক্রবার ওই মুখপাত্র জানান।মুখপাত্র রাভিনা শ্যামদাসানি ওই অঞ্চল থেকে পাওয়া তথ্যে বিষয়টি ‘নিশ্চিত’ হওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন।তিনি আরো জানান, মানবাধিকার কার্যালয় থেকে ওই অঞ্চলের একটি গ্রামে ৪০ জন সাধারণ মানুষকে হত্যার যে খবর পাওয়া গেছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।ইরাকি বাহিনী মসুলের কাছাকাছি চলে আসলে আইএস যোদ্ধারা সেখানকার বেসামরিক নাগরিকদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারে বলে ইতিপূর্বে আশঙ্কা করেছিল বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।
সম্প্রতি ইরাকের সামরিক বাহিনী দেশটিতে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটি মসুলে অভিযান শুরু করেছে।প্রাণ বাঁচাতে সেখানকার বেসামরিক নাগরিকরা দলে দলে পালিয়ে যেতেও শুরু করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। গেল সোমবার ইরাকি বাহিনী মসুল অভিযান শুরুর পরই বেসামরিক নাগরিকেরা সংঘর্ষ থেকে বাঁচতে নগর ছেড়ে পালাতে শুরু করে।বর্তমানে মসুলে বসবাসকারী প্রায় ১৫ লাখ মানুষের মধ্যে পাঁচ হাজারের বেশি আইএস যোদ্ধা।যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও মসুলের বেসামরিক নাগরিকদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।এরই মধ্যে যারা মসুল ছেড়ে পালিয়েছে তারা পশ্চিম সীমান্ত বরাবর সিরীয় শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে।