alal-bnp-01আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে বিএনপি অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল৷আওয়ামী লীগের জুলুম, নির্যাতন, হামলা, মামলা ও মানসিক চাপে একের পর এক বিএনপি নেতাদের মৃতু্য হচ্ছে বলে মনত্মব্য করেছেন বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল৷শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বন্ধু দল আয়োজিত মরহুম হান্নান শাহর স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মনত্মব্য করেন৷ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে হান্নান শাহের মতো অভিজ্ঞ একজন নেতার খুব প্রয়োজন ছিলো৷আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দাবি করে তারা জনপ্রিয় দল, জনপ্রিয় দলের সম্মেলনের নিরাপত্তা নিয়ে এতো ভয় কেন, কাদের ভয় পাচ্ছেন তারা! মনে হচ্ছে, র্যাব আর পুলিশের সম্মেলন হচ্ছে, আর পাশাপাশি ঢাকা শহরের বিয়ে হচ্ছে৷তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, এতো বাড়াবাড়ি ভালো না, রাজনীতির একটা ব্যকারণ আছে, সেটা মেনে চলুন৷তিনি আরও বলেন, বিএনপি’র সম্মেলনে আওয়ামী লীগ না আসলেও, বিএনপি তাদের রাজনৈতিক উদারতার পরিচয় দেবে৷

আলোচনা সভায় সরকারি দলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা খুশি হয়েছি আমাদেরকে দাওয়াত দিয়েছেন, আমরা আনন্দিত৷ আমাদের সম্মেলনে কিন্তু আপনারা আসেন নাই৷ সৌজন্যবোধ দেখিয়ে টেলিফোন করে দুঃখ প্রকাশও করে নাই৷কিন্তু আমরা আপনাদের মতো হীনমন্য নই৷ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে আপনারা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, আপনাদের সম্মেলনে যাওয়ার জন্য বলেছেন৷ বিএনপি যে একটা উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সেই প্রমাণ আপনারা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন পাবেন ইনশালস্নাহ৷ আমরা যাব৷আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বৃহস্পতিবার আমন্ত্রণ জানিয়েছে আওয়ামী লীগ৷প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পাওয়ার পর পর দলীয় ফোরাম এ বিষয়ে সিদ্ধানত্ম নেবে বলে সাংবাদিকদের জানান মির্জা ফখরুল৷

আওয়ামী লীগের কাউন্সিল উপলক্ষে ঢাকায় ব্যাপক নিরাপত্তার সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমাদের কাছে প্রশ্ন জাগে যে, এই সম্মেলনটা কী র্যাবের সম্মেলন, পুলিশ বাহিনীর সম্মেলন, বিজিবির সম্মেলন নাকি ডগ স্কোয়াডের সম্মেলন৷আমরা দেখছি, একমাস ধরে এমন একটা অবস্থা তৈরি করা হয়েছে, এমন একটা আবহাওয়া তৈরি করা হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট মঞ্চ তৈরি হচ্ছে৷ আজকে থেকে রাসত্মা-ঘাটে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে৷ গতকাল রাত থেকে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে৷ তার মানেটা কী?মনে হচ্ছে যেন সরকারের একটা সম্মেলন হচ্ছে৷ র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ তার সভাপতি হবেন আর ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া হয়ত সাধারণ সম্পাদক হবেন- এমন একটা ভাব৷

আলাল বলেন, আওয়ামী লীগ একটা পুরনো রাজনৈতিক দল৷ এই দল এতো জনপ্রিয় একটা দল, তার সম্মেলন থাকবে উন্মুক্ত, তাকে দেখার জন্য হাজার হাজার মানুষ আসবে৷ সেখানে চেকপোস্টের দরকারটি কী ভাই? সেখানে বেনজীর সাহেব ও আসাদুজ্জামান সাহেবের এতো তেজষ্ক্রিয় কন্ঠে বার বার বক্তব্য দিয়ে আকাশে-বাতাশে হুমকি দেওয়ার প্রয়োজনটা কোথায়? কাদেরকে হুমকি দিচ্ছেন- সেটাও আমরা বুঝতে পারছি না৷সম্মেলন যদি উত্‍সবই হয়, কেন বিভিন্ন রাসত্মা-ঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ কেনো এতো বিধিনিষেধ? কী এমন আকাম-কুকাম করেছেন যে, এত ভীত আপনারা৷ কারণটা কী? ভালো কাজ যদি করে থাকেন, সম্মেলন উন্মুক্ত করে দেওয়া উচিত্‍, সবকিছু৷বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আলোকসজ্জা দেখে মনে হচ্ছে, ঢাকা শহরের বিয়ে৷আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের দল বলে নিজেকে দাবি করে৷ মুক্তিযুদ্ধের দল বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দল যদি হয়ে থাকে, আমি দেখতে চাই সম্মেলনের মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধের ১১ সেক্টরের কমান্ডার ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এমএজি ওসমানির ছবি থাকবে৷এই সম্মেলনে আমি ঘোষণা শুনতে চাই- আগামী ৭ নভেম্বরে বিএনপি যেখানে সমাবেশ করতে চাইবে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যদি চায়, বিএনপির অফিসের সামনে যদি চায়, সেখানে সমাবেশ করতে পারবে৷ স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাম-লির সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিবসহ আরও অনেকে৷ সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী বন্ধু দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শরিফ মোসত্মফা জামান লিটু ৷